ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবসে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান
ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবসে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান

ঢাবিতে পতাকা উত্তোলন দিবস পালন

মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনন্য ভূমিকাকে স্মরণের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হলো ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে অবস্থিত বটতলায় ১৯৭১ সালের ২ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করার সঙ্গে যুক্ত কাউকেই এই আয়োজনে আমন্ত্রণ করা হয়নি।

আজ বুধবার সকালে বটতলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে ‘পতাকা উত্তোলন দিবস ২০২২’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আখতারুজ্জামান বলেন, একটি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে যে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমির প্রয়োজন ছিল, তার প্রথম ও প্রধান জোগানদাতা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্বে এমন আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই, যেটি একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পটভূমি তৈরি করেছে। রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত কাজ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে স্বতন্ত্র উল্লেখ করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা, দক্ষতা ও মননশীলতাকে উপজীব্য করেই এই মহৎ কাজটি করেছিলেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামুল হক ভূইয়া, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার প্রমুখ অংশ নেন। পুরো অনুষ্ঠান সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন কলা অনুষদের ডিন আবদুল বাছির।

‘আমন্ত্রণ পাননি উত্তোলকেরা’
১৯৭১ সালের ২ মার্চ ডাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্র সমাবেশে ছাত্রনেতারা বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেই পতাকায় সবুজ আয়তক্ষেত্রের মাঝখানে লাল বৃত্তে ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র। স্বাধীনতার পর মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ ও রং নির্ধারণ করা হয়। এটিই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপ। ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি এই পতাকা সরকারিভাবে অনুমোদিত হয়।

পতাকা উত্তোলন দিবস আজ ৫১ বছরে পা দিয়েছে। কিন্তু এই দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে আমন্ত্রণ পাননি উত্তোলকদের কেউই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়োজনের সমন্বয়কারী আবদুল বাছির প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিজের মতো করেই পতাকা উত্তোলন দিবসটি পালন করে থাকে। এই দিবসের অনুষ্ঠানে সাধারণত বাইরে থেকে অতিথি আনা হয় না। অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। আমি শুধু সমন্বয় করেছি।’