Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন রূপ পাবে রাজশাহীর সোনাদিঘি

সংস্কারের পর নতুন রূপ পাবে রাজশাহী নগরীর সোনাদিঘি। নকশায় তুলে ধরা হয়েছে সুযোগ-সুবিধার চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী শহরের যেকোনো রিকশায় উঠে ‘সোনাদিঘির মোড়’ বলাটাই যথেষ্ট। আলাদা করে ঠিকানা বলতে হয় না। কিন্তু যে সোনাদিঘির এত নাম, সেই দিঘিই এত দিন অবৈধ স্থাপনার আড়ালে ছিল। ফলে মানুষ নাম শুনলেও দিঘি দেখতে পেত না। 

সম্প্রতি দিঘির চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, সোনাদিঘিকে এখন অন্তত তিন দিক থেকে দেখা যাবে। দিঘিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে পায়ে হাঁটার পথসহ মসজিদ, এমফি থিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) ও তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার। চলতি বছরই এই কাজ শুরু হওয়ার কথা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় সোনাদিঘির চারপাশ উন্মুক্ত ছিল। এর পানি এতটাই স্বচ্ছ ছিল যে তা দিয়ে এলাকাবাসীর রান্নার কাজও চলত। পানিতে যাতে কেউ ময়লা ফেলতে না পারে, তা তদারকির দায়িত্বে থাকতেন রাজশাহী পৌরসভার কর্মচারীরা। পদ্মা নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল দিঘি। এতে ভরা বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি ঢুকত দিঘিতে। নদীর ঘোলা পানি থিতিয়ে যাওয়ার পর দেখা মিলত স্বচ্ছ পানির। 

স্থানীয় লোকজন আরও জানান, একসময় নগরবাসীর বিনোদনের কেন্দ্রও ছিল এই দিঘি। এর পাশ দিয়ে ছিল পামগাছ ও বসার জন্য বেঞ্চ। 

পরিবেশবাদী সংগঠন হেরিটেজ-রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, একটা সময় ছিল তাঁদের বিকেল কেটেছে সোনাদিঘির পাড়ের বেঞ্চে বসে। এটিই ছিল নগরের একটি বিনোদনকেন্দ্র। দিঘির পাড়ে একটা বাগানের মতো ছিল। দিঘির পানিও ছিল টলটলে। 

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৮০-৮১ সালের দিক থেকে দিঘির চারপাশে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। ঢাকা পড়ে সোনাদিঘির মুখ। রাস্তা থেকে আর সোনাদিঘি দেখা যেত না তখন। ২০০৯ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ‘এনা প্রপার্টিজ’ নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পুরোনো নগর ভবনের জায়গায় ১৬ তলাবিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণের চুক্তি করে। সেই চুক্তির আওতায় দিঘিকে নতুন করে সাজানোর কথা ছিল। তিন বছরে এই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। ১০ বছর পর নতুন করে দিঘির চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে।

গত শনিবার থেকে সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে দিঘির পাড়ের অবৈধ দোকানপাট ভাঙা শুরু হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, চলতি বছরেই সোনাদিঘি সংস্কারের কাজ শুরু হবে। সংস্কার শেষ হলে দিঘির পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিম দিক থেকে সোনাদিঘিকে দেখা যাবে। তখন এটি আগের মতোই নগরের একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে।