Thank you for trying Sticky AMP!!

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান এই যুবকেরা। ধানমন্ডির জিগাতলায়। ফাইল ছবি

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র ও যুব সংগঠনের হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া নেতা-কর্মীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।

আজ শনিবার রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানিয়েছে। ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসআ) ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সড়ককে নিরাপদ করতে আবারও নয় দফা দাবি তুলে ধরেছে তারা।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মীম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব নিহত হয়। ক্লাস শেষে বাসের জন্য তারা ফুটপাতে অপেক্ষা করছিল। এর প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে আন্দোলনে নামেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। টানা পাঁচ দিন তারা সড়কে অবস্থান করে। এ সময় যান চলাচলের শৃঙ্খলা আনা, চালকদের লাইসেন্স ক্ষতিয়ে দেখার কাজ করে তারা।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে নয় দফা দাবি তুলে ধরেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার ব্যবস্থা করা, জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সব যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং স্পেস নির্মাণ করা, দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে, বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনা, সারা দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন করা, যানজট নিরসনে আউটার রিং রোড বা বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা ও সাইকেল লেনসহ পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা।

দুই বছর আগের এই আন্দোলনের একপর্যায়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। আন্দোলনের পাঁচ দিনের মাথায় চার আগস্ট ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। পরদিন এর প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে মিছিল বের করে ধানমন্ডির দিকে শিক্ষার্থীরা রওনা হন। এ সময় সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পার হওয়ার পরপরই পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা। রক্তাক্ত হন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও পথচারী।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইনজামুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর সেই হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। কোনো বিচারও হয়নি। উল্টো শিক্ষার্থীদের জড়ানো হয় ভিত্তিহীন মামলায়। মামলাগুলো এখনো চলমান। কারও বাঁচতে চাওয়ার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যে মামলা হয়েছে তার কারণে বছরের পর বছর ভুগতে হচ্ছে।

ইনজামুল হক বলেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবেই এমনটা হয়েছে। প্রশাসন চাইলেই সন্ত্রাসীদের বিচারের সম্মুখীন করতে পারে। চাইলেই নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের মামলা তুলে নিত পারে। চাইলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের সময়কার স্মৃতিচারণ করেন। এর মধ্যে দিয়া-রাজীবের সহপাঠীরাও ছিলেন। এ ছাড়া লেখক রাখাল রাহা, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য ফরিদুল হক এবং আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম বক্তব্য রাখেন।