
বরিশালের দপদপিয়ায় কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী এক ডকইয়ার্ডে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নির্মাণাধীন একটি ওয়াটার বাসে (জাহাজ) আগুন লাগে। আগুনে অ্যাডভেঞ্চার-৬ নামের নির্মাণাধীন তিনতলা জাহাজটির প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজাম শিপিং লাইনসের ডকইয়ার্ডে বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তের মধ্যে একটি জাহাজে আগুন জ্বলে ওঠে। স্থানীয় লোকজন নদী থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালান। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যোগ দেন।
নিজাম শিপিং লাইনসের ডকইয়ার্ডের স্বত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার-৬-এ আগুন লাগার সময় ডকইয়ার্ডে কোনো কাজ চলছিল না। বিদ্যুৎ–সংযোগও বন্ধ ছিল। বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটা নাশকতা বলেই মনে হচ্ছে। তা না হলে একসঙ্গে তিনটি ফ্লোরে আগুন লাগার কথা নয়।’
নিজাম উদ্দিন মৃধার ভাষ্য, অ্যাডভেঞ্চার-৬ জাহাজটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। দু-এক দিনের মধ্যে জাহাজটি ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচল শুরুর কথা ছিল। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওয়াটার বাসটির তিনটি তলায় আগুন লেগে সব ফিটিংস, চেয়ার, ইঞ্জিনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস নমুনা সংগ্রহ করেছে। তারা তদন্ত কমিটি করবে বলেছে।’
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক শামীম আহসান চৌধুরী বলেন, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গতকাল রাত নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। অগ্নিনির্বাপক লঞ্চসহ ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে রাত ১২টার দিকে অভিযান সমাপ্ত করা হয়। তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ বলছে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া এভাবে আমরা বলতে পারি না। এ জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে আগুন লাগার কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাবে।’