Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা, ২৭ মার্চ। ছবি: ফোকাস বাংলা

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান। তাঁরা কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার বিষয়ে খুব অসন্তুষ্ট হন। ফাইভ স্টার হোটেল না হলে তাঁরা অপছন্দ করেন।

আজ রোববার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তো দৈন্য আছে। এটা তো একটা বিশেষ অবস্থা। আমরা যাঁদের নিয়ে আসি, তাঁদের হজ ক্যাম্পে রাখি, এখন আরও কয়েকটা হাসপাতালও জোগাড় করেছি।’

গতকাল শনিবার ইতালিফেরত প্রবাসীদের হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল খুব অস্থিরতা করেছেন। তাঁরা দেশে আসছেন, কোনো কোয়ারেন্টিনে যেতে চান না। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে যাবেন, এই আগ্রহে আসছেন। আমরা যেখানে রেখেছিলাম, আগেও রেখেছিলাম, তাঁরা সেটা পছন্দ করেননি। বাংলাদেশে ফ্ল্যাট বাথরুম, তাঁরা কমোড বাথরুম ইউজ করেন, সুতরাং তাঁদের অসুবিধা হয়েছে। আমরা সেখানে পর্যটন থেকে খাবার দিয়েছি, তাঁরা মনে করেন সোনারগাঁও, ফাইভ স্টার থেকে খাওয়ার দেওয়া উচিত। সেটা দিতে পারিনি। সে জন্য তাঁরা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাঁদের বিভিন্ন রকম অভিযোগ ছিল। তাঁরা মনে করেন এগুলো খুব নোংরা।’

এ কে মোমেন জানান, যেসব দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেশি, সেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এটা কার্যকর হবে। সরকারের মূল উদ্দেশ্য জনগণকে রক্ষা করা। কয়েকজনের কারণে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ অসুস্থ হোক সরকার তা চায় না। কারণ, বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা আছে। সরকার আগে আবেদন করেছিল, যাতে যাঁরা প্রবাসে আছেন, তাঁরা আরও কিছুদিন সেখানে থাকেন। কিন্তু তাঁরা সেটা শোনেননি। সে জন্য বাধ্য হয়ে ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে।

ঠিক কতটি দেশের ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, ইউরোপকে যেহেতু এপিসেন্টার ঘোষণা করা হয়েছে, সে জন্য যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য দেশগুলো এবং যেসব দেশে প্রকোপ বেশি, যেমন: চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান—এসব দেশ থেকে কেউ এখন আসুক তা সরকার চায় না। তিনি আরও জানান, কেউ যদি ২৮ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো দেশ ভ্রমণ না করে থাকেন, তাহলে তিনি যুক্তরাজ্য থেকে আসতে পারবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত তাদের দেশে যেতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশও আজ থেকে ভারতের নাগরিকদের এ দেশে আসতে দেবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এ কে মোমেন জানান, স্কুল–কলেজ হিড়িকের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হলে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। করোনাভাইরাসে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে ১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। কিন্তু মিডিয়ার কারণে অনেকে মনে করছেন, বাচ্চারা হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে। কিন্তু একটাও ছাত্রছাত্রী আক্রান্ত হয়নি। শিক্ষার্থীদের কেউ অসুস্থ হলে সমস্যা হতো। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড স্কুল বন্ধ করেনি। পশ্চিমবঙ্গ করেছে, সেটা অন্য কারণেও হতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, শিক্ষার্থীরা স্কুলে থাকলেই বরং ভালো। স্কুলে হাত ধুতে হয়, কীভাবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের উপায় শিখছে। বাড়িতে গেলে তারা ঘুমাবে এবং খারাপ কাজ হবে।


এ কে মোমেন বলেন, তবে এ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত সতর্ক। প্রতিনিয়ত নজর রাখা হচ্ছে। যখন প্রয়োজন হবে এবং কোনো ‘ইন্ডিকেশন’ পাওয়া যাবে, তখন অবশ্যই স্কুল–কলেজ বন্ধ করা হবে।