বগুড়া শহরের দুটি সড়ক বেহাল

বগুড়া শহরের নামাজগড়-বারপুর সড়কের পিচের ঢালাই উঠে ছোট-বড় গর্ত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে পানি জমে যায়। ছবিটি গত ২১ সেপ্টেম্বর সড়কের ধরমপুর থেকে তোলা l প্রথম আলো
বগুড়া শহরের নামাজগড়-বারপুর সড়কের পিচের ঢালাই উঠে ছোট-বড় গর্ত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে পানি জমে যায়। ছবিটি গত ২১ সেপ্টেম্বর সড়কের ধরমপুর থেকে তোলা l প্রথম আলো

বগুড়া শহরের প্রধান সড়কের বনানী থেকে মাটিডালি পর্যন্ত নয় কিলোমিটারে বিভিন্ন স্থানের ইট-কার্পেটিং উঠে গেছে। একই চিত্র শহরের দত্তবাড়ি-নামাজগড় মোড়-বারপুর সড়কেরও। বেহাল এই দুই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে।
গত আগস্টে সরেজমিনে দেখা গেছে, বনানী-মাটিডালি সড়কের সাতমাথা থেকে থানা মোড় পর্যন্ত অংশের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ আর গর্ত। শহরের সাতানীবাড়ি, দত্তবাড়ি, ফুলবাড়ি, মাটিডালি বাজারসহ কয়েকটি অংশেও ইট-কার্পেটিং উঠে গেছে। সাতমাথায় জেলা জাসদ কার্যালয়ের সামনে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধময় পানির কারণে পথচারীদের যাতায়াত বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে।
এ সড়কে চলাচলকারী আট-নয়জন পথচারী বলেন, শহরের প্রধান এই সড়কে প্রতিবছরই সংস্কারের নামে অর্থ ব্যয় করা হয়। কিন্তু তা কোনো কাজেই আসছে না।
কবি নজরুল ইসলাম সড়ক এলাকার ব্যবসায়ী সাজু মিয়া বলেন, দিন দিন শহরের অনেক উন্নতি হচ্ছে। দালানকোঠা বাড়ছে। আধুনিক বিপণিবিতান হচ্ছে। কিন্তু শহরের প্রধান সড়ক আর সড়কের পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

দত্তবাড়ি থেকে নামাজগড় মোড় পর্যন্ত সড়কের ধরমপুর বাজার এলাকার কয়েকটি অংশের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এ সড়কের দত্তবাড়ি টিপটপ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে, করনেশন ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন স্থানে, নামাজগড় মোড়, উপশহর এবং ধরমপুর বাজারের বিভিন্ন অংশ খানাখন্দে ভরে গেছে।

শহরের ট্রাফিক পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন রাত দশটার পর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত শহরের বনানী-মাটিডালি সড়ক দিয়ে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার ও রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট এবং হিলি স্থলবন্দরসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েক হাজার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক রাজধানী ঢাকার পথে চলাচল করে। এ ছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের এই প্রধান সড়কে অসংখ্য রিকশা, ইজিবাইক, অটোরিকশা চলাচল করে। এত বিপুল পরিমাণ যানবাহন চলাচলের দিক থেকে সড়কটি যথেষ্ট প্রশস্ত নয়। দিনের বেলা ট্রাফিক-ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে।

সড়ক দুটি দেখভাল করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এ বিষয়ে সওজ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত অর্থবছরে বনানী-মাটিডালি সড়কের কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছিল। এবারের বর্ষা মৌসুমে আরও কিছু অংশের কার্পেটিং ও ইটখোয়া উঠে গেছে। চলতি অর্থবছরের শহরের প্রধান সড়ক এবং পুরাতন দিনাজপুর সড়কের দত্তবাড়ি-বারপুর পর্যন্ত অংশ সংস্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘পানিনিষ্কাশন-ব্যবস্থা দেখার দায়িত্ব পৌরসভার। সওজ শুধু সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি দেখে।

বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে শহর উন্নয়ন তহবিল থেকে চলতি অর্থবছর ১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার নালা নির্মাণের কাজ চলছে। তবে শহরের প্রধান সড়কের দুপাশে প্রশস্ত ও আধুনিক নালা নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ জন্য পর্যাপ্ত অর্থ এবং প্রয়োজনীয় জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু পৌরসভায় এই মুহূর্তে অর্থসংকট রয়েছে। নালা প্রশস্ত করার জন্য কেউ জায়গাও দিতে চায় না।