
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার পুরান ঢাকায় সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারা স্মৃতি জাদুঘর ও জাতীয় চার নেতা স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন। পাকিস্তান সরকারের সময় দীর্ঘকাল কারাগারে কাটানো বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ে ব্যবহার করা নানা সামগ্রী দেখে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই বিকেল তিনটা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছান। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে শেখ রেহানার ছেলে রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি বিজড়িত সাবেক এই কারাগারে প্রবেশ করেই বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এই কেন্দ্রীয় কারাগারেই জেল হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া কক্ষটিতে যান (বর্তমান জাতীয় চার নেতা স্মৃতি জাদুঘর)। সেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট চার সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর জাতীয় চার নেতার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।
এর আগে আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে এই স্থানে নির্মাণাধীন সরকারের অন্যান্য প্রকল্পগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন।
চলতি বছরই ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর করায় নাজিম উদ্দিন রোডের এই পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে দুইটি ঐতিহাসিক জাদুঘর জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।