গাছ থেকে বাছাই করে সংগ্রহ করা হয় ফল। সেই ফলে কোনো রাসায়নিক মেশানো হয় না। সংগ্রহের এক দিনের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয় গ্রাহকের কাছে। বিষমুক্ত টাটকা ফল পেয়ে গ্রাহকেরাও সন্তুষ্ট।
মুঠোফোনে ক্রয় আদেশ নিয়ে ক্রেতার কাছে টাটকা ফল পৌঁছানোর এই উদ্যোগ একদল তরুণের। উদ্যোগের নাম ‘তাজা ফল’। উদ্যোক্তারা সরাসরি ফল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নন। নেভাডা সফট নামে তাঁদের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান আছে। এর অফিস ৯৮২ পূর্ব শেওড়াপাড়া, মিরপুর। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ করেন তাঁরা।
মূলত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কত তারিখ কী পরিমাণ ফল সরবরাহ করা যাবে, তা গ্রাহককে জানিয়ে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গ্রাহক অর্ডার করেন। অগ্রিম টাকা দিতে হয় না। ফল বুঝে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ করতে হয়।
নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রয় আদেশ হয়ে গেলে ডেলিভারির আগের দিন বাগান থেকে ফল পাড়া হয় এবং ঢাকায় এনে প্যাকেট করে গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলের জন্য বাগান মালিকের সঙ্গে আগেই চুক্তি করেন ‘তাজা ফল’ সরবরাহকারীরা।
নেভাডা সফটপ্রধান কারিগরি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘মানুষ এক কেজি ফল কিনে খেলেও যেন ভালো, বিষমুক্ত ফল খেতে পারে—আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
তাজা ফলের উদ্যোগে প্রথম ফল সংগ্রহ করা হয় ২৫ মে। ১৬ হাজার লিচু সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১৩ হাজার বেদানা জাতের লিচু দিনাজপুর মাশিমপুরের মো. মোজাম্মেল হকের বাগান থেকে এবং ৩ হাজার মাদ্রাজি জাতের লিচু রইছ উদ্দীনের বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়।
প্রথম চালান থেকে লিচু সংগ্রহ করেন গুলশান-২-এর ৬০ নম্বর সড়কের বাসিন্দা মো. নূর। তিনি বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট। তাঁদের পরবর্তী চালানেও আমি ৫০০ লিচু অর্ডার করেছি।’ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা পারভেজ শিকদারও ‘তাজা ফলের’ কাছ থেকে লিচু নিয়েছেন দুই হাজার। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে তারা যদি আম সরবরাহ করে, আমি আমও নেব।’
ঢাকার বাইরেও লিচু সরবরাহ করছে ‘তাজা ফল’। প্রথম চালান থেকে সিলেটের আব্দুর রাশেদ এবং ময়মনসিংহের মো. তমালকে এক হাজার করে লিচু সরবরাহ করা হয়েছিল।
আগামী ২ জুন দ্বিতীয় ধাপে লিচু সরবরাহ করবেন উদ্যোক্তারা। তখন আনা হবে ৫০ হাজার লিচু। এর মধ্যে ৪০ হাজার বেদানা আর ১০ হাজার চায়না-৩ জাতের লিচু থাকবে। বেদানা জাতের ১০০ লিচুর দাম পড়বে ৮০০ টাকা এবং চায়না-৩ পড়বে ৭৫০ টাকা। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস tazafol, ফেসবুক পেজ tazafol.bd এবং ওয়েব পেজে tazafolbd.com ফলের অর্ডার করা যাবে।
এ মৌসুমে আমও সরবরাহ করবে ‘তাজা ফল’। ইতিমধ্যে অনেকেই আমের অর্ডার করে রেখেছেন। আম সংগ্রহের জন্য বাগান দেখা শেষ কর্তৃপক্ষের। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, নিজের তত্ত্বাবধানে বাগান করার পরিকল্পনা আছে। সেখানে কীটনাশকের ব্যবহার সীমিত করে বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাজা ফলের যোগাযোগের ঠিকানা: মুঠোফোন-০১৬১২৪২৬০২৬, ০১৬৭২৪২৬০২৪, ০১৭১৭৪১৩০৩১।