
অস্ট্রেলিয়ার বুনো পাখি ককাটেল। শখের বশে প্রতিপালন করতে দেখা যায়। দুটো ককাটেল ছানা কিনে তিন বছর পোষার পর তিনটি ডিম দেয়। সেই ডিম ফুটে বাচ্চাও হয়েছে। সিলেটে ককাটেল ছানা পুষে বাচ্চা ফোটানোর এ কাজটি করেছেন সুবিদবাজারের বনকলাপাড়ার তরুণ হাসান আল মাহমুদ। তাঁর দাবি, সিলেটে তাঁর প্রতিপালন করা ককাটেলই প্রথম বাচ্চা দিয়েছে।
বনকলাপাড়ায় হাসানের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, পাখি প্রতিপালনের জন্য বাসার একটি কক্ষ আলাদা করে রাখা। প্রায় ছয় মাস বয়সী ককাটেলের তিনটি ছানা মেঝেতে হাঁটছে, খাবার খাচ্ছে। আবার কখনো খাঁচায় মায়ের সঙ্গে থাকছে। ওই কক্ষে ককাটেল ছাড়াও আরও কিছু বিদেশি পাখি রয়েছে।
হাসান জানান, ২০০০ সালে বাজরিশ নামের এক জোড়া পাখি দিয়ে বিদেশি পাখি পোষা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে তিনি ইন্দোনেশিয়ার জাবা, অস্ট্রেলিয়ার ঘুঘু পাখি পালন শুরু করেন। ২০১০ সালে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকা থেকে একজোড়া ককাটেল ছানা কিনে আনেন। গত ৩ অক্টোবর তিনটি ডিম দেয়। ডিমে তা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিলে ২২ অক্টোবর ডিম ফুটে তিনটি বাচ্চা হয়। বিদেশি পাখি প্রতিপালনে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো ককাটেলের মাধ্যমে প্রথম সম্ভব হয়েছে জানিয়ে হাসান বলেন, বাসায় প্রতিপালন করা পাখির সঙ্গে তাঁর সারাটা সময় কাটে বলে এলাকায় তিনি ‘পাখিপ্রেমী বাবু’ নামে পরিচিত। ২০০৪ সালে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে একটি পাখি মেলা হয়েছিল, এরপর সিলেটে আর কোনো পাখি মেলা হয়নি। হাসানের ইচ্ছা, বিদেশি পাখিগুলো নিয়ে সিলেটে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা।
ককাটেল সম্পর্কে পাখি বিশেষজ্ঞ শরীফ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি অস্ট্রেলিয়ান বুনো পাখি। পরিণত বয়সের ককাটেল সাধারণত বীজজাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। ককাটেল ছানার খাদ্য তালিকায় রয়েছে পালংশাক, কলমিশাক. বরবটি, লেটুসপাতা, গাজর, ধনিয়াপাতা, পুদিনাপাতা। এসব খাবার সহজলভ্য হওয়ায় দেশে শখের বশে এটির প্রতিপালনও জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে বাচ্চা ফোটানো একটি কষ্টসাধ্য কাজ বটে।’