চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়তি ফি নিয়েছে, তা সাত দিনের মধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ফেরত দিতে হবে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ তথ্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডকেও জানাতে হবে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই নির্দেশের কথা জানিয়ে বলেন, বাড়তি টাকা ফেরত না দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরিচালনা কমিটি, এমপিও কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করা হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বোর্ডগুলো এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দেবে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেবেন, অসম্মানিত হবেন না।’
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর কিছু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন বাড়িয়ে দেয়। মাউশির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার সাতটি স্কুল শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ১১ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। এই সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চবিদ্যালয়, মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল এবং মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এর বাইরেও চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেতন বৃদ্ধি করে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণের সময়ও কিছু প্রতিষ্ঠান বোর্ডের নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি আদায় করে। হাইকোর্ট অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিকে অকার্যকর ঘোষণা করে সুয়োমোটো রুল জারি করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি নীতিমালা লঙ্ঘন করে ভর্তি ফি বৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
আইডিয়ালে বাড়তি ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ: ব্রিফিংয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অনুমোদন ছাড়া ভর্তি করতে পারবে না।
মন্ত্রণালয় ও মাউশির একটি সূত্র জানায়, মাউশির মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন ফোন করে ওই স্কুলে অতিরিক্ত ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর এই স্কুলটি আরও দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।