Thank you for trying Sticky AMP!!

বিঘ্নিত হতে পারে বাংলাদেশ ও ভারতের উন্নয়নের স্বপ্ন

প্রথম আলো ফাইল ছবি

বাংলাদেশ এখন ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। এই সম্পর্ক ভারতের নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ। তাই দক্ষিণ এশিয়ার নিকট দুই প্রতিবেশী পরস্পরকে ছাড়া সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে না। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন বাংলাদেশ ও ভারতের অগ্রযাত্রার আকাঙ্ক্ষার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এ অঞ্চলের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা আর অগ্রযাত্রার স্বার্থে একসঙ্গে সমস্যা সমাধানে মনোযোগী হওয়া জরুরি।

আজ বুধবার রাজধানীর বিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কবিষয়ক এক সেমিনারের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) ‘পরিবর্তিত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত একে অন্যকে ছাড়া সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক। এ নিয়ে কোনো বিতর্কের সুযোগ নেই। আমাদের অন্য প্রতিবেশী আছে, যাদের আমরা এড়িয়ে চলব না, মুখ ফিরিয়ে নেব না।’

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক বজায়ের প্রসঙ্গ টেনে গওহর রিজভী বলেন, ‘এখানে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যথেষ্ট ভালো করেছে। ভারতের সঙ্গে চিরাচরিত বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখে চলেছে। আবার চীনসহ অন্যদের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলে থাকতে চাই। তেমনই অঞ্চল ও পথের উদ্যোগ থেকেও আমরা দূরে থাকতে চাই না। কারণ, এটি আমাদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করছে, যার সদ্ব্যবহার করতে আমরা আগ্রহী।’

গওহর রিজভীর মতে, মিয়ানমারে যা ঘটছে, তা নিয়ে সারা বিশ্বের সব দেশের উদ্বিগ্ন থাকা জরুরি। সেখানে গণহত্যা হয়েছে চালানো হয়েছে—বিশ্বের নিকৃষ্টতম নৃশংসতা। মিয়ানমার যা করতে চেয়েছে, সেটা তারা করেই ছেড়েছে। রাতারাতি তো এটা হয়নি। পরিকল্পিত ওই গণহত্যা আজ বাংলাদেশের সমস্যা ভবিষ্যতে তা অন্যদের জন্য সমস্যা তৈরি করবে। এটা সবার জন্য একটা সতর্কবাণী। তিনি মনে করেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়া দুই দেশের জন্যই হুমকি। গওহর রিজভী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সরকার উগ্রবাদ দমনে যথেষ্ট ভালো করেছে। জানি না কত দিন এটা করতে পরাব। আমরা দেখছি এ অঞ্চলে অস্ত্র আসছে। আমরা যদি এ ব্যাপারে প্রতিবেশীদের নিয়ে সতর্ক না হই, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে তা মোকাবিলায় তবে আমাদের অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে।’

গওহর রিজভী বলেন, ‘দুটি উন্নয়নশীল হিসেবে ভারত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা ২০৪১ এর লক্ষ্যকে ধরে এগিয়ে চলেছি। সে ক্ষেত্রে মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে আমাদের চলার পথে বাধা হতে পারে। আশা করি, আমরা সামনে পথ খুঁজে নিতে পারব।’

ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের (আইডিএসএ) মহাপরিচালক সুজন চিনয় বলেন, বাংলাদেশ এখন ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। আর এই নিবিড় সম্পর্ক ভারতের নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ। ভারতের ‘প্রাচ্যমুখী নীতিকে’ পূর্ণতা দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। তাঁর মতে, আন্তরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ এখনো এ অঞ্চলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। এমন একটা জটিল সময়ে অবস্থান করেও শান্তি আর উন্নয়নের পথে দুই দেশকে এগিয়ে যেতে হবে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ ও ভারতকে পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

বিসের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুন্সি ফয়েজ আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আবদুর রহমান।