বিডিআর থেকে বিজিবি

হারিয়ে গেছে বিডিআর। মুখে মুখে ফেরা সেই নাম বদলে বাহিনীর নাম হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি। সঙ্গে বদল হয়েছে বাহিনীর পোশাক এবং আইনও। বিদ্রোহ তো দূরের কথা, এখন সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতিতেই পেতে হবে কঠোর শাস্তি।

২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের পর বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরের ১ মার্চ এ-সংক্রান্ত খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১০ সালের ১২ জুলাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-এর খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেয়। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিল-২০১০’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। গেজেট প্রকাশিত হয় ২৬ ডিসেম্বর।

কর্মকর্তারা বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতার অভিযোগ ছিল। জাতীয় পর্যায়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশেও তা উল্লেখ করা হয়েছিল। বর্তমানে বাহিনীর প্রতিটি কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পিলখানাসহ সব সেক্টর সদরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ স্থাপনায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বর্ডার গার্ড সিকিউরিটি ইউনিটের (বিজিএসইউ) কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের প্রধানতম গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই (প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর) এবং এনএসআইয়ের (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা) সঙ্গে সব সময় সমন্বয় করা হচ্ছে। উপরন্তু যেকোনো আকস্মিক ঘটনা মোকাবিলায় পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

বিডিআর ও বিজিবির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিজিবি আইন অনুযায়ী সাংগঠনিক কাঠামোর পরিবর্তন, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তির বিধান হয়েছে। এ ছাড়া মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতির ব্যবস্থাসহ অনেক যুগোপযোগী পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন আইন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত রিজিয়ন সদর দপ্তরগুলো সীমান্তে অপরাধ দমন, সীমান্ত সুরক্ষার জন্য অপারেশনাল ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছে। সদর দপ্তর উচ্চপর্যায়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা তৈরি করছে। আঞ্চলিক সদর দপ্তরগুলো বিএসএফের (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) ফ্রন্টিয়ার সদর দপ্তরগুলোর প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্যক্রম সমন্বয় করছে। বিজিবি এখন একেবারে নতুনভাবে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।