মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

বিদেশি অনুদান পাওয়া এনজিওর আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনতে আইন

বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) নেওয়া বিদেশি অনুদানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়ন করেছে সরকার। এনজিওবিষয়ক ব্যুরো এসব সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় এ-সংক্রান্ত বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন, ২০১৪-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। আইন অনুযায়ী, এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধন ছাড়া কোনো বেসরকারি সংস্থা কার্যক্রম চালাতে পারবে না। এ ছাড়া বেসরকারি সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি বা প্রকল্প শুরুর আগে এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন নিতে হবে। ব্যুরো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েই এ অনুমোদন দেবে। পার্বত্য এলাকায় কোনো সংস্থা কাজ করতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।
নতুন আইনে প্রতিটি এনজিওর একটি মূল হিসাব (মাদার অ্যাকাউন্ট) থাকবে। ওই হিসাবে বৈদেশিক অনুদানের সব টাকা সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিবছর ওই হিসাব নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন এবং বার্ষিক বিবরণী এনজিও ব্যুরোর কাছে জমা দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান।
আইন অনুযায়ী কোনো প্রকল্পে বিদেশি পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হলে এনজিও ব্যুরোর অনুমতি সাপেক্ষে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিয়ে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া যাবে। প্রতিটি এনজিওর গঠনতন্ত্র, সাধারণ ও পরিচালনা পর্ষদ থাকা বাধ্যতামূলক।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালের দুটি অধ্যাদেশ দিয়ে এখন এনজিও কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশ দুটি একত্র করে আইনে পরিণত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনটি পাস হলে একটি এনজিও ১০ বছরের জন্য নিবন্ধন পাবে।
১৯৯০ সালে দেশে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো কার্যক্রম শুরু করে। এ পর্যন্ত ব্যুরো দুই হাজার ৩০৩টি এনজিওর নিবন্ধন দিয়েছে, যার মধ্যে ২৩৩টি বিদেশি এনজিও রয়েছে।
গতকালের বৈঠকে ‘দ্য সুপ্রিম কোর্ট জাজেজ (লিভ, পেনশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেজ) অর্ডিন্যান্স সংশোধনী অধ্যাদেশ ২০১৪’-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়। বিচারপতিদের পেনশনের বাধ্যতামূলক সমর্পণের ক্ষেত্রে আনুতোষিকের হার বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে। ওই তারিখে বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও আনুতোষিকের হার বাড়ানো হয়েছিল। এর ফলে ৫০ বছরের বেশি বয়সের বিচারপতিরা অবসরে গেলে আনুতোষিক হিসেবে প্রতি এক টাকার জন্য ২৩০ টাকা পাবেন। তাঁরা এখন প্রতি টাকার জন্য পাচ্ছেন ২০০ টাকা।
গতকালের বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদের ২০১৫ সালের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির দেওয়া ভাষণের খসড়া অনুমোদন হয়। বৈঠকের শুরুতে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে মন্ত্রিসভা শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে।