বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানে 'বীরসপ্তক'

সন্ধ্যায় বীরসপ্তকে আলো জ্বলে ওঠার পর পাল্টে যায় চারদিকের রূপ। গত বুধবার ছবিটি তুলেছেন সাহাদাত পারভেজ
সন্ধ্যায় বীরসপ্তকে আলো জ্বলে ওঠার পর পাল্টে যায় চারদিকের রূপ। গত বুধবার ছবিটি তুলেছেন সাহাদাত পারভেজ

সন্ধ্যা নামতেই জ্বলে উঠবেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠ। মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, হামিদুর রহমান, মোস্তফা কামাল, মো. রুহুল আমিন, মতিউর রহমান, মুন্সী আব্দুর রউফ ও নূর মোহাম্মদ শেখ। তাঁদের বীরত্বের আলোকবর্তিকায়, সবুজ আবহে আলোকিত হয়ে উঠবে নতুন প্রজন্ম।
বনানী এলাকায় উড়ালসেতু তৈরি ও চালুর পর নিচের অংশটা একরকম ফাঁকাই পড়ে ছিল। সে স্থানটিকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে গাছরূপী সাত বীরশ্রেষ্ঠর স্মৃতিস্তম্ভ (মনুমেন্ট) বা টাওয়ার তৈরি হচ্ছে, যার নাম ‘বীরসপ্তক’। সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের (এসডব্লিউ-ওয়েস্ট) আওতায় স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি হচ্ছে। এখানে ব্যয় হচ্ছে দুই কোটি টাকার ওপর। আলোকসজ্জায় ব্যয় হবে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে এখানে এখন সন্ধ্যা হলেই আলোর প্রক্ষেপণ উপস্থাপিত হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে উড়ালসেতুর ওপর দিয়ে যাওয়া গাড়ির আরোহী এবং নিচের রাস্তার পথচারীরা অপার মুগ্ধতায় বীরসপ্তক উপভোগ করছেন।
পুরো কাজ শেষ হওয়ার পর মনুমেন্টগুলোর চারদিক ঘিরে প্রাকৃতিক লতাপাতা আর ফুলবেষ্টিত থাকবে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আনা হয়েছে টবভর্তি ফুল আর লতাপাতা। উপস্থিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, সাতটি স্মৃতিস্তম্ভ সাত বীরশ্রেষ্ঠকে উপস্থাপন করবে। আর লতাপাতাগুলো বীরশ্রেষ্ঠদের আদর্শকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেবে।
চারদিকের বাকি আয়োজন পুরোপুরি শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। স্মৃতিস্তম্ভের পরিকল্পনাকারী স্থপতি এহসান খান বলেন, স্মৃতিস্তম্ভগুলো উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকার মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। যার মাধ্যমে প্রকৃতির পুনর্জন্মও দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, গাছ হচ্ছে জীবনের প্রতীক। স্মৃতিস্তম্ভগুলোকে গাছ হিসেবে দেখছেন তিনি, যেগুলো জীবনের কথাই বলবে।
এখানে আলোর কাজ করছে এইচ এস ইন্টারন্যাশনাল। এর অন্যতম পরিকল্পনাকারী আবদুস সাত্তার বলেন, স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় সূর্যের আলোর সাহায্যে আলোকবর্তিকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলবে এবং নিভবে। আলোকবর্তিকা এবং রঙের প্রতিফলনগুলো একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ‘এক বর্ষপঞ্জি’ আকারে সাজানো হয়েছে। তিনি জানান, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শোক দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও ছুটির দিনে আলাদা আলাদা রঙে, চরিত্রে আলো কাজ করবে। যেমন বিজয় দিবসের দিন মাঝের স্মৃতিস্তম্ভ হবে লাল, আর চারদিকে সবুজ।
আবদুস সাত্তার বলেন, স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় যে আলোকসজ্জা পদ্ধতি বা লাইটিং সিস্টেম প্রয়োগ করা হয়েছে, তা কম্পিউটারনিয়ন্ত্রিত অ্যাডভান্স এলইডি পদ্ধতি। যা ভবিষ্যতে অন্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যাবে।