
সকাল থেকে সূর্যের দেখা নেই। তাই শীতের ঠান্ডা ভালোই জেঁকে বসেছিল। কুয়াশা না মেঘলা, বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু হঠাৎ বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে রাজশাহীর আকাশ ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নামল। পথচারীরা যে যেদিকে পারল, ছুটতে লাগলেন। খোলা আকাশের নিচে মেলে বসা দোকানিরা দোকান গোছাতে গোছাতেই ভিজে জবুথবু হয়ে গেলেন। নগরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্নিশের নিচে আশ্রয় হলো সারি সারি মানুষের। ঠিক এক ঘণ্টা পরে বৃষ্টি ধরে এল। ১০ মিনিটের বিরতি দিয়ে আবার শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সকাল ছয়টায় রাজশাহীতে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। বেলা তিনটায় তা কমে দাঁড়ায় ৮৬ শতাংশে। সকাল ছয়টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা তিনটায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক ঘণ্টায় ১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলা হয়, হয়েছে, সাধারণত শীতকালে বৃষ্টি কম হয়। তবে যে বৃষ্টি হয়েছে তা পশ্চিমা লঘু চাপ ও পুবালি বাতাসের সংমিশ্রণের কারণে হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে আগামীকালও সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার আকাশও মেঘলা রয়েছে। আজ রাতে এই মেঘলা অবস্থা আরও বাড়তে পারে। সে জন্য আজ রাত ও আগামীকালের মধ্যে ঢাকাতেও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
হঠাৎ বৃষ্টিতে মুহূর্তের মধ্যে রাজশাহী শহরের চিত্র পাল্টে যায়। চলমান পথচারীরা আটকে যান। রিকশা চলাচল কমে যায়। শীতের সময় সাধারণত বৃষ্টি হয় না দেখে রিকশাচালকেরা কেউ পলিথিন নিয়ে বের হননি। ফলে বৃষ্টির সময় তাঁরা বিপাকে পড়েন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোকেই হালকা-পাতলা চলাচল করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরে ছাতা মাথায় ও বর্ষাতিপরা লোকজনের চলাচল বাড়তে থাকে।
নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকায় একটি দোকানের সামনে থেকে এক পথচারী ১০ মিনিট ধরে একটি অটোরিকশাকে ধরার জন্য দূর থেকে ইশারা করছিলেন কিন্তু বৃষ্টির মধ্যে কিছুতেই তিনি রিকশার নাগাল পেলেন না। একটি ভবনের কার্নিশের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, প্রায় এক ঘণ্টার জন্য যেন রাজশাহী শহরে থমকে দাঁড়াল।
নগরের কুমারপাড়া এলাকায় ভ্যানের ওপরে শীতের পোশাক বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম। হঠাৎ বৃষ্টি আসায় বস্তা দিয়ে তিনি পোশাক ঢাকার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে তাঁর অনেক পোশাক ভিজে যায়। শরিফুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে সাময়িক ঝামেলা হলেও শীত নামতে পারে। শীতের পোশাক বিক্রি বাড়তে পারে।
নগরের আলুপট্টি এলাকায় খোলা আকাশের নিচে জুতা স্যান্ডেল বিক্রি করছিলেন আব্দুল লতিফ। তিনি বৃষ্টি আসার কারণে দোকানের ওপরে পলিথিন টাঙানোর চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি তাঁর দিনের ব্যবসা মাটি করে দিয়ে গেল।