Thank you for trying Sticky AMP!!

শেষ শয্যায় সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান

মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মিজানুর রহমান খানের দাফন সম্পন্ন হয়।

মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

মিজানুর রহমানের মরদেহবাহী গাড়িটি বেলা দেড়টার কিছু আগে সেখানে পৌঁছায়। কবরস্থানে তাঁর স্ত্রী, সন্তান, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও প্রথম আলোর সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে তৃতীয় জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের মরদেহ নেওয়া হয় কারওয়ান বাজারে তাঁর কর্মস্থল প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে। সেখানে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সহকর্মীরা এই বরেণ্য সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।সেখানে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নানা পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা জানানোর সময় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, মিজানুর রহমান খান প্রথম আলোর সঙ্গে ১৫ বছর ধরে ছিলেন। প্রথম আলোর সেরা সাংবাদিকদের একজন ছিলেন মিজানুর রহমান খান। দেশের বর্তমান সময়ে অন্যতম সেরা সাংবাদিক। তিনি সারা সময় সাংবাদিকতা নিয়ে থাকতেন। সব বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল। তিনি একজন সেরা মানুষও। পরিশ্রমী ও সৎ সাংবাদিক। তাঁর অনুপস্থিতি প্রথম আলোর জন্য বেদনাদায়ক, দুঃখজনক। তাঁর অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়।

মতিউর রহমান শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘আসুন আমরা মিজানুর রহমান খানের আদর্শ রক্ষা করি, তাঁর উদ্দেশ্য মনে রাখি। আমরা যেন আরও ভালো সাংবাদিকতা করতে পারি। মিজানুর রহমান খানের পরিবার আমাদের পরিবারভুক্ত। অতীতের মতো বর্তমান ও ভবিষ্যতেও আমরা তাঁদের পাশে থাকব।’

এ সময় প্রয়াত মিজানুর রহমান খানের বড় ছেলে এবং দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘মিজানুর রহমান খান অসাধারণ সাংবাদিক ছিলেন। তার চেয়েও বেশি অসাধারণ মানুষ ছিলেন। আইন, মানবাধিকার, সংবিধান বিষয়ে প্রজ্ঞার কারণে এই পেশার মানুষেরাও তাঁর কাছে পরামর্শ নিয়েছেন। প্রজ্ঞা ও সাহসের সম্মিলন ছিল তাঁর মাঝে। লালসা নেই, লোভ নেই, সাংবাদিকতার আদর্শ বলতে যেটা বোঝায়, সেটা ছিলেন তিনি। তাঁর চলে যাওয়াটা সাংবাদিকতার জন্য বিরাট ক্ষতি।’

এর আগে আজ সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন। জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

Also Read: সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার জানাজায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা অংশ নেন। এ ছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা জানাজায় অংশ নেন। সেখানেও জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শোকাহত পরিবার, স্বজন ও সহকর্মীরা।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান খান মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

Also Read: বিশিষ্ট সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত

মিজানুর রহমান খান করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। তাঁর নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি ৫ ডিসেম্বর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে ১০ ডিসেম্বর তাঁকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

Also Read: জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত

Also Read: প্রথম আলো কার্যালয়ে মিজানুর রহমান খানকে সহকর্মীদের শেষ শ্রদ্ধা