শি ব পু র উ প জে লা নি র্বা চ ন

সম্পদের মূল্য নিয়ে লুকোচুরি!

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ২০ ভরি স্বর্ণালংকারের মূল্য দেখিয়েছেন দুই লাখ টাকা। আর ২৫ ভরির মূল্য আড়াই লাখ টাকা দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী হারুনুর রশিদ খান। এ ছাড়া দুজনই অনেক কম দেখিয়েছেন ইলেকট্রনিক সামগ্রী, কৃষিজমি, আসবাবের মূল্যও।
নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় ওই দুই প্রার্থী বাজারদরের বিপরীতে এমন অসামঞ্জস্য তথ্য দিয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছেন। এই উপজেলা পরিষদের ভোট ২৭ ফেব্রুয়ারি।
চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন তোফাজ্জল হোসেন, হারুনুর রশীদ খান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বিল্লাল হোসেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক মোল্লা, আবদুল মান্নান ভূইয়া পরিষদের আহ্বায়ক আবুল হারিস রিকাবদার ও সদস্যসচিব আরিফ উল ইসলাম মৃধা।
হলফনামা খতিয়ে দেখা যায়, তোফাজ্জল হোসেন একটি টেলিভিশন, পাঁচটি পাখা ও একটি মুঠোফোন সেটের মূল্য লিখেছেন ২০ হাজার টাকা। আসবাবের মধ্যে তিনটি খাট, একটি আলমারি, ৩০টি চেয়ার, দুটি টেবিল, একটি ড্রেসিং টেবিল ও এক সেট সোফার মূল্য দেখিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। অপর দিকে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে ২৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ কৃষিজমির মূল্য দেখিয়েছেন ছয় লাখ ৪০ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে প্রতি শতাংশ জমির মূল্য পড়ছে দুই হাজার ৪৮২ টাকা। অকৃষিজমি ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশের মূল্য পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭০ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে একটি টিনশেড ও একটি কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনের মূল্য দেখিয়েছেন চার লাখ টাকা।
এ ছাড়া তোফাজ্জল হোসেনের নামে একটি মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, স্ত্রীর নামে একটি প্রাইভেটকার ও ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে তাঁর একাধিক নেতা-কর্মী জানিয়েছেন। কিন্তু হলফনামায় ওই সব সম্পদ উল্লেখ করেননি।
এদিকে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত হারুনুর রশিদ খান কৃষি, দোকানভাড়া, ব্যবসা ও সম্মানীভাতাসহ বছরে পাঁচ লাখ ২৯ হাজার ৮১৬ টাকা আয় করেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে দুই লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে পাঁচ লাখ টাকা। তিনিও ২৫ ভরি স্বর্ণালংকারের অর্জনকালীন মূল্য দেখিয়েছেন আড়াই লাখ টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর পরিমাণ উল্লেখ না করে শুধু আনুমানিক পাঁচ হাজার টাকা ও আসবাবের মূল্য জানা নেই উল্লেখ করেছেন। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তিনটি টিনশেডের বিল্ডিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করেছেন পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, হারুনুর রশিদ খানের বাড়িতে রঙিন টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, দামি আসবাব রয়েছে।
জানতে চাইলে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘হলফনামায় দেওয়া মূল্য অর্জিত সময়ের। ২২ থেকে ২৫ বছর আগে আমি তা অর্জন করেছি। তখন এসবের মূল্য এর চেয়ে বেশি হওয়ার কথা নয়।’ একই যুক্তি দেন হারুনুর রশিদ খানও।