Thank you for trying Sticky AMP!!

সামাজিক আন্দোলনে আগ্রহ প্রবল

রাজনীতিতে আগ্রহী না হলেও সামাজিক আন্দোলন নিয়ে তরুণদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো সামাজিক আন্দোলন ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণকে আকৃষ্ট করেছে।

প্রথম আলোর তারুণ্য জরিপ ২০১৯ অনুযায়ী, ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। এর মধ্যে আন্দোলনে পুরোপুরি সমর্থন ছিল ৬৪ শতাংশের। আর কিছুটা সমর্থন জুগিয়েছিলেন ২২ দশমিক ৫ শতাংশ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে কয়েকটি আন্দোলন সাড়া জাগিয়েছিল, তার একটি হলো নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ওই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সপ্তাহব্যাপী ওই আন্দোলন সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। এই আন্দোলনের জেরে সরকার সংসদে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাস করে।

তবে অল্প কিছু সংখ্যক তরুণ সাড়া জাগানো ওই আন্দোলনের বিপক্ষে মত দিয়েছেন। জরিপে ৭ শতাংশের বেশি তরুণ এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। এদের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ আন্দোলনের পুরোপুরি বিরোধী ছিলেন। আর ৪ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা কিছুটা বিরোধী ছিলেন। ৫ দশমিক ৯ শতাংশ আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া বা বিরোধিতার বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না।

সাম্প্রতিক সময়ের আরেকটি সাড়া জাগানো আন্দোলন হলো কোটা সংস্কার আন্দোলন। সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন গড়ে তোলেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। হামলা-মামলা-গ্রেপ্তারেও আন্দোলন থামেনি। ওই অবস্থায় ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিল হবে বলে জানান। তবে তা কার্যকর না হওয়ায় আন্দোলন অব্যাহত থাকে। এরপর ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জরিপে দেখা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ৮৩ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণের সমর্থন ছিল। এর মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরোপুরি এবং ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ কিছুটা সমর্থন দিয়েছিলেন।

জরিপে অংশ নেওয়া ৮ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণবলেছেন, তাঁরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। এদের ৪ শতাংশ পুরোপুরি এবং ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কিছুটা বিরোধী ছিলেন। ৭ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না।

জরিপে প্রশ্ন ছিল, এ দুটি আন্দোলনের মতো সামাজিক আন্দোলনের প্রতি কি তরুণেরা আকর্ষণ বোধ করেন? উত্তরে ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ বলেছেন, তাঁরা এ ধরনের সামাজিক আন্দোলনে আকর্ষণ বোধ করেন। মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা, অপেক্ষাকৃত কম বয়সী তরুণ এবং উচ্চশিক্ষিত তরুণেরা সামাজিক আন্দোলনের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। জরিপ বলছে, তরুণদের এক-তৃতীয়াংশ (৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ) সামাজিক আন্দোলনের প্রতি খুবই আকর্ষণ বোধ করেন। মোটামুটি আকর্ষণ বোধ করেন আরও ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ।

এর বিপরীতে একেবারেই আকর্ষণ বোধ করেন না ৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং খুব একটা আকর্ষণ বোধ করেন না ১০ শতাংশ তরুণ। আর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ বলেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে নিশ্চিত নন।

সামাজিক আন্দোলনে বিশাল সংখ্যক তরুণ আকর্ষণ বোধ করলেও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন মাত্র ৭ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ। আন্দোলনে অংশ নেওয়া তরুণের সংখ্যা গ্রামের চেয়ে শহরে বেশি। মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের সংখ্যা বেশি। আবার অপেক্ষাকৃত কম বয়সীরা জ্যেষ্ঠদের চেয়ে বেশি সংখ্যায় আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

সরাসরি মাঠে না থাকলেও অধিকাংশ তরুণ নানাভাবে আন্দোলনের খোঁজ খবর রেখেছেন। ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা খুব গভীরভাবে আন্দোলনসংক্রান্ত খবর অনুসরণ করেছেন। কিছুটা হলেও খবর অনুসরণ করেছেন ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশ।