Thank you for trying Sticky AMP!!

সৌদিফেরত শ্রমিকদের বেশির ভাগই গেছেন ভিজিট ভিসায়

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেড়েছে উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘এ সময় যেসব শ্রমিক সৌদি আরব থেকে দেশে এসে আটকা পড়েছে, তাদের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ আবার কাজে ফিরে গেছে। এটা অবশ্য এনজিওদের বক্তব্য। আমাদের রেকর্ড যেটা আছে, সেটা আরও কম। এটি কিন্তু বাস্তবতা।’

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর রমনায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী জানান, গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাঁদের অনেকে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বা দেশে কাজ না থাকায় ফেরত এসেছেন। আশঙ্কা হয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা, করোনার প্রভাবে কর্মী নিয়োগকারী প্রধান দেশগুলোর শ্রমবাজার বিপর্যস্ত হওয়ায় অনেক প্রবাসী কর্মী বেকার হয়ে পড়বেন। কিন্তু আশার কথা হলো, এখন পর্যন্ত দেশে ফেরত আসা কর্মীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠেনি। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিদেশি মিশন ও দূতাবাস একযোগে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

দেশে আটকে পড়া কত প্রবাসী কর্মী কাজে ফেরত গেছেন, এমন প্রশ্নে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ৮০ শতাংশ যাঁরা সৌদি আরবে কাজে ফিরেছেন, তাঁরা বিভিন্ন পর্যায়ে ফিরেছেন। যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের বেশির ভাগ ভিজিট ভিসায় গেছেন। এ বাস্তবতাও কিন্তু মানতে হবে। ভিজিট ভিসায় ওখানে গিয়ে কেউ অনিয়মিত হন, আনডকুমেন্টেড হন বা সমস্যায় পড়েন; তখন বদনাম কিন্তু বাংলাদেশের। আজকের পত্রিকাগুলো দেখলেই এ তথ্য জানতে পারবেন।

কত শ্রমিক দেশ থেকে আবার কাজে ফিরল, আমাদের এই ডেটাবেইস এখনো চালু হয়নি। যারা ফেরত এসেছে, সে রিপোর্টও আগে আমাদের কাছে থাকত না। পুরো জিনিসটার পুনর্নির্মাণ করছি। কে গেল, কে এল—এর তথ্যভান্ডার তৈরি প্রক্রিয়াধীন।
ইমরান আহমদ, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী

এর আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই সেই রেমিট্যান্স এসেছে ১০ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের তুলনায় ৪১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি।

মন্ত্রী বলেন, ১৫ জুলাই থেকে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সরল সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আওতায় ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪১১ জন ঋণগ্রহীতাকে ৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

আশঙ্কা হয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা, করোনার প্রভাবে কর্মী নিয়োগকারী প্রধান দেশগুলোর শ্রমবাজার বিপর্যস্ত হওয়ায় অনেক প্রবাসী কর্মী বেকার হয়ে পড়বেন। কিন্তু আশার কথা হলো, এখন পর্যন্ত দেশে ফেরত আসা কর্মীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠেনি।

বিদেশি শ্রমিকদের নতুন চাহিদা আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, প্রায় ১২ হাজার পোশাককর্মী জর্ডানে নেওয়া হবে। বোয়েসেলের মাধ্যমে বিনা খরচে তাঁরা যাবেন, বিশেষ করে নারীরা যাবেন।

অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়, চলতি বছরের আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের মূল ও জাতীয় অনুষ্ঠান ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সেটির প্রতিপাদ্য ‘মুজিব বর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান।’

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, প্রবাসী শ্রমবাজারে এখন মন্ত্রণালয়ের মূল ফোকাস হচ্ছে, মানসম্পন্ন অভিবাসন (কোয়ালিটি মাইগ্রেশন) করা। বেশিসংখ্যক মানুষকে বিদেশে পাঠানোর চেয়ে দক্ষ মানুষকে বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। দায়িত্বশীল অভিবাসনের জন্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যম ও অভিবাসীদের দায়িত্বশীল, সচেতন হতে হবে।

সচিব জানান, করোনা পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমিক দেশে ফিরেছেন, তাঁদের স্বল্পতম সময়ে সহজ সুদে বিনিয়োগ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০০ কোটি, পরে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শামসুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।