হতশ্রী নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্ক

বংশাল নয়াবাজারে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্কের চারপাশ দখল হয়ে গেছে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার তোলা l প্রথম আলো
বংশাল নয়াবাজারে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্কের চারপাশ দখল হয়ে গেছে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার তোলা l প্রথম আলো

নয়াবাজারের ৮২ বছর পুরোনো নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্কের মূল ফটকে কোনো নামফলক নেই। সামনের ফুটপাথ দখলদারদের কবলে। নেই কোনো শৌচাগার। এলাকাবাসীর দাবি, চারপাশ দখলমুক্ত করে পার্কের সৌন্দর্য ফেরানো হোক।
সিরাজউদ্দৌলা পার্কের অবস্থান নয়াবাজারের জিন্দাবাহার এলাকায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে। পার্কের চারদিক বিবর্ণ গ্রিল দিয়ে ঘেরা। মূল ফটকের সামনেই লেগুনা স্ট্যান্ড। প্রবেশপথের ডান পাশের গ্রিলে একটি ইঞ্চি দশেক লম্বা সাইনবোর্ডে ছোট করে লেখা ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্ক, স্থাপিত-১৯৩৪।’ ফটকের ওপর পার্কের কোনো নামফলক নেই।
গত বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, পার্কের সামনের ফুটপাথে সারি বেঁধে বসেছেন ফলবিক্রেতারা। ফলের প্যাকিং বাক্সগুলো রাখা হয়েছে গ্রিলের ওপারে, পার্কের ভেতর। পার্কের তত্ত্বাবধায়ক আবু মিয়া বললেন, ‘অনেক দিন ধরেই ফুটপাতে দোকান বসে, কেউ কখনো কিছু বলেনি এ ব্যাপারে।’
নাজির হোসেন তাঁর কিংবদন্তির ঢাকা বইতে বলেছেন, সিরাজউদ্দৌলা পার্ক একসময় ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছিল। পার্কের মাঝখানে একটি বক্তৃতা মঞ্চ ছিল যেখানে রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় নেতারা বক্তব্য দিতেন। তবে বৃহস্পতিবার গিয়ে সেখানে কোনো বক্তৃতা মঞ্চ খুঁজে পাওয়া গেল না। পার্কের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আছে একটি রং-ওঠা ফোয়ারা। পার্কে আসা কয়েকজন লোক জানালেন, অনেক দিন ধরেই ফোয়ারাটি অকেজো।
পার্কে হাঁটতে আসা অন্তত পাঁচজন সেখানে শৌচাগারের অভাবের কথা বললেন। সিরাজউদ্দৌলা পার্কে নিয়মিত হাঁটতে আসেন হাজেরা বেগম। তিনি বললেন, ‘পার্কে এমনিতে কোনো অসুবিধা নাই। তয় একটা বাথরুম বানাইলে খুব সুবিধা হয়।’
পার্কের বিষয়ে কথা বলতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিল্লাল শাহর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সিরাজউদ্দৌলা পার্কের দরজা ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তত্ত্বাবধায়ক আবু মিয়া বললেন, এলাকাবাসী মূলত সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটার জন্যই পার্কটি ব্যবহার করেন। জিন্দাবাহার এলাকার বাসিন্দা শাকিল আলম বলেন, ‘পার্কের পরিবেশ এমনিতে ভালো। মাদকের সমস্যা নাই। ফুটপাত খালি কইরা একটু সুন্দর কইরা সাজাইলে, গ্রিলগুলা রং করলে ভালো হইতো।’