করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র

৫টি কুমিরের বাচ্চা মারা গেছে, ৩৮টি নিখোঁজ

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে ৫টি কুমিরের বাচ্চা মারা গেছে এবং ৩৮টি নিখোঁজ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক বনপ্রহরীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় বন বিভাগ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ২টি প্যান (কৃত্রিম পুকুর) থেকে গত রোববার রাতে ৫টি কুমিরের বাচ্চা মৃত পাওয়া গেছে এবং ৩৮টি নিখোঁজ রয়েছে। এ প্যানে দুই বছর বয়সী কুমির রাখা হয়। পরে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানোর পর গত মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেদীজ্জামানকে প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দুদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।
সাইদুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে ওই কেন্দ্রের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী জাকির হোসেন ও বনপ্রহরী মো. মাহাবুব দোষী বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী মাহাবুবকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর জাকিরের বিষয়টি মোংলা থানাকে জানানো হয়েছে। নিখোঁজ কুমির ও পুরো বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করার জন্য গতকাল দুপুরে চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেদীজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী রোববার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিলুপ্তপ্রায় লবণ পানি প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালনপালনের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকায় ৮ একর জায়গার ওপর বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারি এ কুমির প্রজনন কেন্দ্র। শুরুতেই জেলেদের জালে আটক ছোট ও বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কেন্দ্রে লবণ পানির দুটি নারী কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল এবং একটি পুরুষ কুমির রোমিও রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে বর্তমান বছর পর্যন্ত জুলিয়েট ও পিলপিল থেকে কেন্দ্র মোট ৭২৩টি ডিম থেকে ৪৬৫ বাচ্চা পেয়েছিল।