
ভোরের কাগজের অনলাইন এডিটর মিজানুর রহমান সোহেলকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘অসত্য’ তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।
মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাঁর ঢাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ সকালে ছেড়ে দেওয়ার পর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিনের মাধ্যমে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের বক্তব্য আসে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়বকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো গণমাধ্যম আমার ওপর দায় চাপিয়েছে। তাদের উদ্দেশেই আমার বক্তব্য—এটা অনভিপ্রেত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকার অবকাশই নেই।’
মিজানুর রহমানকে তুলে নেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা ওঠে। তাতে এর সঙ্গে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তোলা হয়। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও।
১০ ঘণ্টা পর ছাড়া পেয়ে বাসায় ফিরে মিজানুর প্রথম আলোকে বলেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) কার্যকরের প্রেক্ষাপটে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও করণীয় বিষয়ে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। তিনি এর সঙ্গে যুক্ত। ডিবির কার্যালয়ে তাঁকে নিয়ে গিয়ে কর্মকর্তারা এই সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে কথা বলেন। ডিবির কর্মকর্তাদের কথায় তাঁর মনে হয়েছে, ওপরের মহলের নির্দেশনায় তাঁরা চান, এই সংবাদ সম্মেলন না হোক। এ জন্য তাঁকে একধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ দেওয়া হয়েছে।
মিজানুর দেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যম, পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন ও ডিজিটাল বিভাগের প্রধানদের সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স’-এর সাধারণ সম্পাদক।
মিজানুর রহমানের সঙ্গে ব্যক্তিগত বা পেশাগত কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা এনইআইআর বাস্তবায়ন করছি। অবৈধ হ্যান্ডসেটের লাগাম টানতে সংক্ষুব্ধ পক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি বৈঠকও করেছে।’
অনিবন্ধিত মুঠোফোন হ্যান্ডসেটের ব্যবহার রোধ ও টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হতে যাচ্ছে এনইআইআর ব্যবস্থা। এটি চালু হলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে নিবন্ধনবিহীন, চুরি হওয়া বা আমদানি অননুমোদিত ফোনের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ হবে বলে আশা করছে সরকার।
মিজানুরকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এনইআইআর বাস্তবায়নের সঙ্গে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ‘মনের মাধুরী মিশিয়ে সত্যের অপলাপ’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এমন ‘প্রোপাগান্ডা’ মুক্তমত প্রকাশের স্বাধীনতাকেই ভুলুণ্ঠিত করছে। আমরা মনে করি, এ ধরনের অসত্য তথ্য প্রচার জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তাই আশা করি, এরপর আর কেউ এ ধরনের লেখায় বিভ্রান্ত হবেন না।’