রেজাউর রহমান
রেজাউর রহমান

বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান

বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।

ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্‌ক্‌ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।

প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।

রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।

পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।