
তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রশাসনিক ভবন সাড়ে ১৫ ঘণ্টার বেশি সময় অবরোধ করেছেন আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ‘মেধাবী প্রকল্পের’ আওতায় থাকা শিক্ষার্থীরা। অবরোধের কারণে প্রায় আট ঘণ্টা আটকা পড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম। দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ তুলেন নেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হকসহ অন্য কর্মকর্তারা ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিকেল চারটার দিকে একটি নিয়োগ বোর্ডের সভায় অংশ নিতে উপাচার্য ভবনে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করেন।
অবরোধে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাকিম আহম্মেদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা এবং স্লোগান দেওয়ার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
গত বুধবার থেকে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তাঁদের মূল দাবি, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী প্রকল্পে’র আওতায় থাকা শিক্ষার্থীদের সাধারণ আবাসন বৃত্তি নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁরা আবাসন বৃত্তিকে ‘মেধাভিত্তিক’ না করে ‘প্রয়োজনভিত্তিক’ করার এবং এ জন্য আরোপিত ৭০ শতাংশ উপস্থিতি ও সিজিপিএ-নির্ভর শর্ত বাতিলের দাবি জানান।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী ও আইন বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিক ইমরোজ বলেন, ‘গত বুধবার আমরা প্রথম উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। পরে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিই। কিন্তু তাতেও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি।’
পরে সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করে যৌক্তিক সমাধানের কথা বলা হয়। লিখিত ঘোষণা আসার পর রাত সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটক খুলে দেন এবং অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।