Thank you for trying Sticky AMP!!

দক্ষিণের পথে চালু হতে যাওয়া রেলপথটি। রোববার মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায়

এবার দক্ষিণের পথে রেল, আজ উদ্বোধন

পদ্মা সেতু হয়ে রেল চলাচল আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হয়।

পদ্মা সেতু হয়ে দেশের দক্ষিণের পথে রেলপথ চালু হতে যাচ্ছে। নতুন রেলপথটি ঢাকার গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাদারীপুর–ফরিদপুর গেছে। আগামী বছর এই রেলপথের বাকি অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

রেলওয়ের তথ্য অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মাওয়া রেলস্টেশন থেকে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর মাওয়া স্টেশন থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে যাবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের যাত্রী হওয়ার কথা রয়েছে। চীন থেকে আমদানি করা ১৪টি কোচ দিয়ে সরকারপ্রধানের জন্য ট্রেনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

বেলা দুইটায় ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনের পর শিগগিরই এই পথে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। তবে এখনো দিন–তারিখ ঠিক হয়নি।
প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন

২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু করা হয়। দ্বিতল এই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সেতুর ভেতরে রয়েছে ট্রেন চলাচলের পথ। পদ্মার দুই পাড়ে যোগাযোগ স্থাপন করতে নেওয়া হয় আলাদা প্রকল্প, যা পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প নামে পরিচিত।

প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, উদ্বোধনের পর শিগগিরই এই পথে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। তবে এখনো দিন–তারিখ ঠিক হয়নি।

Also Read: পদ্মা সেতু রেল সংযোগ : স্বপ্নপূরণের আরেক অঙ্গীকার

বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪৩ জেলায় রেলপথ রয়েছে। ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথের মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জ ও মাদারীপুর রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে। ঢাকার দক্ষিণের উপজেলা কেরানীগঞ্জে এত দিন রেল যোগাযোগ ছিল না। যশোর পর্যন্ত রেলপথ চালু হলে নড়াইল নতুন করে যুক্ত হবে। ভবিষ্যতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালী পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে রেলওয়ের। বর্তমানে বরিশাল বিভাগে কোনো রেলপথ নেই।

২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া ট্রেন চলবে। একইভাবে ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে প্রতিদিন সাত জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে প্রতিদিন চলবে পাঁচ জোড়া ট্রেন।

রেলওয়ের অপারেশন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা-খুলনা পথের সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-যশোর পথের বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি পদ্মা সেতু হয়ে চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ট্রেন দুটি বর্তমানে ঢাকা থেকে টঙ্গী-জয়দেবপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু-ঈশ্বরদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে চলাচল করছে। একইভাবে রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করা মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চালানোরও পরিকল্পনা আছে। এর বাইরে কমিউটার ট্রেন চালুর বিষয়টিও বিবেচনায় আছে।

Also Read: পদ্মা সেতুতে চলল ট্রেন, গেল ঢাকা থেকে ভাঙ্গা

তিন অংশে ভাগ করে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রথম অংশ ঢাকা-মাওয়ার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৮ কিলোমিটার। এই অংশে কেরানীগঞ্জে একটি নতুন স্টেশন তৈরি হচ্ছে। মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। এই অংশে নতুন স্টেশন ভবন রয়েছে পাঁচটি। এই দুই অংশ আজ উদ্বোধন হচ্ছে।

রেলওয়ের অপারেশন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা-খুলনা পথের সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-যশোর পথের বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি পদ্মা সেতু হয়ে চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ট্রেন দুটি বর্তমানে ঢাকা থেকে টঙ্গী-জয়দেবপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু-ঈশ্বরদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে চলাচল করছে।

প্রকল্পের শেষ অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর। এই অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৩ কিলোমিটার। স্টেশনের সংখ্যা ১৪। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩ মে একনেকে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। অনুমোদনের সময় প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। বর্তমানে এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক)। চীনের অর্থায়নে ওই দেশেরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেলপথ নির্মাণের কাজটি করছে।

Also Read: দক্ষিণের পথে রেলযাত্রার প্রস্তুতি

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর সংযোগ রেলপথে কী পরিমাণ যাত্রী ও মালামাল পরিবহন হতে পারে, তার একটি বিশ্লেষণ এরই মধ্যে তৈরি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ (সিআরইসি)। স্বল্পমেয়াদি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া ট্রেন চলবে। একইভাবে ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে প্রতিদিন সাত জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে প্রতিদিন চলবে পাঁচ জোড়া ট্রেন। এই সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। ‘ওয়ান-ডিরেকশন’ বা একমুখী চলাচলের ওপর ভিত্তি করে এই প্রাক্কলন তৈরি করেছে সিআরইসি।