জনসংখ্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন অনুকরণীয়। তারপরও নতুন সমস্যা মোকাবিলায় নতুন নীতির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

নতুন জনসংখ্যা নীতিতে জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই নীতি সংখ্যা বা পরিসংখ্যানের চেয়ে মানুষের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েছে। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, জনসংখ্যার লভ্যাংশের সুযোগ বাংলাদেশ আর ৩৬ বছর কাজে লাগাতে পারবে।
গতকাল সোমবার ‘বাংলাদেশ জনসংখ্যা নীতি ২০২৫’ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের এক অনুষ্ঠানে এই নতুন জনসংখ্যা নীতি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবছর ১১ জুলাই জনসংখ্যা দিবস পালন করা হলেও অনিবার্য কারণে মন্ত্রণালয় গতকাল এই দিবস পালন করেছে। এর আগে জনসংখ্যা নীতি ছিল ২০১২ সালের।
নতুন জনসংখ্যা নীতির রূপকল্প হচ্ছে, ‘জনসংখ্যার পরিকল্পিত উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও জনমিতির লভ্যাংশ অর্জন করা এবং একটি সুস্থ, সুখী ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’ নির্ভরশীল জনসংখ্যার তুলনায় উৎপাদনশীল জনসংখ্যা বেশি হওয়ার বিষয়টি জনমিতির লভ্যাংশ নামে পরিচিত।
নতুন এই নীতি করা হয়েছে মোটাদাগে ছয়টি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য। এর মধ্যে আছে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা নিশ্চিত করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জন; পরিবার পরিকল্পনার অপূর্ণ চাহিদা, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু, বাল্যবিবাহসহ সব ধরনের ক্ষতিকর আচরণ কমানো; চতুর্থ ও পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের সুবিধা অর্জনে পরিকল্পনা গ্রহণ; অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ; জেন্ডার সমতা ও জেন্ডার লভ্যাংশ অর্জন এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণ নিশ্চিত করা। প্রতিটি উদ্দেশ্য পূরণে কর্মকৌশলও নীতিতে বর্ণনা করা হয়েছে।
জনসংখ্যা দিবসের অনুষ্ঠানে ২২ পৃষ্ঠার এই জনসংখ্যা নীতি প্রকাশ করা হয়। তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরহাজান বেগম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা বিভাগের দুই সচিব, স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তিনজন মহাপরিচালক এবং ইউএনএফপিএর প্রতিনিধি।
নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমরা পছন্দের পরিবার গড়ার জন্য তারুণ্যের ক্ষমতায়নের কথা বলছি। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা, সহায়ক পরিবেশ এবং সচেতনতা। তরুণদের উপযুক্তভাবে প্রস্তুত করতে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
নতুন জনসংখ্যা নীতিতে দেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতির একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১ হাজার ১১৯ জন মানুষ বাস করে, দেশে বাল্যবিবাহ অনেক বেশি, মোট প্রজনন হার (টিএফআর) বেশ কয়েক বছর ধরে ২ দশমিক ৩ শতাংশে স্থির হয়ে আছে, শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৩১, মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৩৫। দেশে ১৫ বছর বা এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেকার, শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ কম। এই প্রেক্ষাপটে সরকার জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করেছে।
এই নীতির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০৬১ সালের পর আর বাড়বে না। তখন দেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি। ২০৬২ সাল থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঋণাত্মক হবে এবং মোট জনসংখ্যা কমতে থাকবে। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশ জনসংখ্যার লভ্যাংশের যে সুযোগ পেয়ে আসছে তা অব্যাহত থাকবে ২০৬১ সাল পর্যন্ত। তখন সমাজে প্রবীণ মানুষের হার অনেক বেশি থাকবে।
মানবাধিকার, ন্যায্যতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, জেন্ডার সমতা, বৈষম্যহীনতা, স্বেচ্ছা সম্মতি ও অবহিত পছন্দ, তথ্য প্রাপ্তি, গোপনীয়তা, সেবার মান ও অংশীদারত্ব–অংশগ্রহণকে ২০২৫ সালের জনসংখ্যা নীতির মূল ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তবে আগের জনসংখ্যা নীতিগুলোতে ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট’ বা ‘দুটির বেশি সন্তান নয়, একটি হলে ভালো হয়’ এ ধরনের স্লোগান ছিল। নতুন নীতিতে স্লোগান ধরনের কিছু নেই। নীতিতে বলা হয়েছে, জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা বা জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করার কাজটি একক কোনো মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, এর সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা দরকার।
নতুন জনসংখ্যা নীতিতে দেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতির একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১ হাজার ১১৯ জন মানুষ বাস করে, দেশে বাল্যবিবাহ অনেক বেশি, মোট প্রজনন হার (টিএফআর) বেশ কয়েক বছর ধরে ২ দশমিক ৩ শতাংশে স্থির হয়ে আছে, শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৩১, মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৩৫। দেশে ১৫ বছর বা এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেকার, শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ কম। এই প্রেক্ষাপটে সরকার জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করেছে।
এই নীতির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০৬১ সালের পর আর বাড়বে না। তখন দেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি। ২০৬২ সাল থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঋণাত্মক হবে এবং মোট জনসংখ্যা কমতে থাকবে। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশ জনসংখ্যার লভ্যাংশের যে সুযোগ পেয়ে আসছে তা অব্যাহত থাকবে ২০৬১ সাল পর্যন্ত। তখন সমাজে প্রবীণ মানুষের হার অনেক বেশি থাকবে।
মানবাধিকার, ন্যায্যতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, জেন্ডার সমতা, বৈষম্যহীনতা, স্বেচ্ছা সম্মতি ও অবহিত পছন্দ, তথ্য প্রাপ্তি, গোপনীয়তা, সেবার মান ও অংশীদারত্ব–অংশগ্রহণকে ২০২৫ সালের জনসংখ্যা নীতির মূল ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তবে আগের জনসংখ্যা নীতিগুলোতে ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট’ বা ‘দুটির বেশি সন্তান নয়, একটি হলে ভালো হয়’ এ ধরনের স্লোগান ছিল। নতুন নীতিতে স্লোগান ধরনের কিছু নেই। নীতিতে বলা হয়েছে, জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা বা জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করার কাজটি একক কোনো মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, এর সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা দরকার।