জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জকসু নির্বাচনে ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের ২১ দফা ইশতেহার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ হবে। প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া জকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আবদুল আলিম আরিফ, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী মাসুদ রানা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী নওশীন নওয়ার জয়া এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী মোছা. সুখীমন খাতুন। সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, আবাসনসংকট, পরিবহন–স্বল্পতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। একটি শক্তিশালী শিক্ষার্থী সংসদই প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারে। তাই আমাদের কাছে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন শুধু জয়-পরাজয়ের লড়াই নয়; এটি বরং দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় এবং একটি আধুনিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্য অর্জনের লড়াই।’

‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল তাদের ২১ দফা ইশতেহারে ক্যাম্পাসকে আধুনিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং কেরানীগঞ্জে আবাসন প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। পাশাপাশি পুরান ঢাকার হলগুলোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

ইশতেহারে র‍্যাগিং, সাইবার বুলিং ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ, মাদকমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘প্রোটেক্ট জবিয়ানস’ অ্যাপ ও বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ওবিই কারিকুলাম বাস্তবায়ন, শ্রেণিকক্ষ আধুনিকায়ন, স্টারলিংক ইন্টারনেট, গবেষণার জন্য স্কলারশিপ বৃদ্ধি, ল্যাব সমৃদ্ধকরণ এবং আন্তবিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ ফেস্ট ও কর্মশালার আয়োজনের কথা বলা হয়েছে ইশতেহারে। এতে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে বই, জার্নাল ও ডিজিটাল রিসোর্স বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা, ক্যাফেটেরিয়া সুবিধা, ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা ও ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নেও জোর দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এজিএস প্রার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল কোনো প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে আসেনি; এসেছে বাস্তবসম্মত ইশতেহার নিয়ে। আমরা বিশ্বাস করি, ভোট কেবল একজন প্রতিনিধি নির্বাচনের বিষয় নয়; বরং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামীর ভাগ্য নির্ধারণের চাবিকাঠি।’

মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিনের বঞ্চনা দূর করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব পুনরুদ্ধার করতে আমরা স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও মূল্যবান ভোট প্রত্যাশা করছি। ভয়ের সংস্কৃতিকে বিদায় জানিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে একটি নতুন ভোরের সূচনা করব।’