দুদকের প্রতিবেদন

রেড ক্রিসেন্টের ভবন নির্মাণ, নিয়োগ ও অর্থ ব্যবহারে অনিয়ম

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভবন নির্মাণ, জনবল নিয়োগ ও অর্থ ব্যবহারে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগে গত রোববার রাজধানীর মগবাজারে সংস্থাটির জাতীয় সদর দপ্তরে দুদক অভিযান চালায়।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান ও উপসহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন। অভিযানে রেড ক্রিসেন্টের মহাসচিব ও উপমহাসচিবের বক্তব্য নেওয়া হয় এবং নিয়োগ ও ভবন নির্মাণসংক্রান্ত একাধিক নথি সংগ্রহ করা হয়।

দুদকের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ২০০১ সালে বোরাক রিয়েল এস্টেট এবং ২০০৩ সালে মাল্টিপ্ল্যান ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে দুটি ভবন নির্মাণ চুক্তি করে। এসব চুক্তিতে ডেভেলপারদের (নির্মাতা প্রতিষ্ঠান) সঙ্গে একতরফাভাবে সুবিধাজনক শর্ত রাখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি চুক্তিতে ডেভেলপারকে ৭৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার দেওয়া হয়, যা দুদকের মতে আর্থিকভাবে ক্ষতিকর ও অস্বাভাবিক। এ ছাড়া বিভিন্ন পদে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের অভিযোগেরও প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত নিয়োগ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দুদক বলছে, সংস্থাটি দেশি-বিদেশি অনুদানের অর্থও সঠিকভাবে ব্যয় করেনি। অভিযানকালে কর্মকর্তাদের বক্তব্য ও সংগৃহীত নথিপত্র বিশ্লেষণ করে কেনাকাটা ও দরপত্র প্রক্রিয়ায় একাধিক অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।

দুদকের অভিযান ও অনিয়ম–দুর্নীতির বিষয়ে জানতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথম আলো। আজ মঙ্গলবার রাতে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে প্রথম আলোকে জানানো হয়, দুদক যেসব বিষয়ে তদন্ত করতে এসেছিল, সব কটিই বিগত আওয়ামী লীগ আমলের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে। এর সঙ্গে বর্তমানের সদস্যদের কোনো সম্পর্ক নেই।

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে পাওয়া তথ্য ও নথি বিশ্লেষণ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।