ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবদুল হান্নানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবদুল হান্নানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ

ওসমান হাদিকে গুলি

আমাকে শোরুমে নিয়ে যান, সব সত্য বেরিয়ে আসবে: আদালতে মোটরসাইকেলের মালিক

শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নান আদালতে দাবি করেছেন, তিনি ওই মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য র‌্যাব ও পুলিশকে তাঁকে শোরুমে (বিক্রয়কেন্দ্র) নিয়ে যেতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তারা তা করেনি।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ করে ফেরার পথে বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় তাঁকে গুলি করা হয়। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির অবস্থা এখনো সংকটজনক।

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যে মোটরসাইকেলে গিয়ে তাঁকে গুলি করেছিল সন্ত্রাসীরা, সেই মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানকে গতকাল রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাব।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হান্নানকে আজ রোববার আদালতে হাজির করে পুলিশ। রাজধানীর পল্টন থানার উপপরিদর্শক সামিম হাসান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলমের আদালতে এই আবেদনের শুনানি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় যে হোন্ডা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। হোন্ডার একটি নেমপ্লেট ছিল। হোন্ডার মালিকানার তথ্য যাচাই করে তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ বাহিনী মালিক হিসেবে আবদুল হান্নানের নাম পেয়েছে। হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য যারা গুলি করেছে, তাদের সঙ্গে হোন্ডার মালিকের সম্পর্ক কী, সেটা যাচাই করা প্রয়োজন। সে জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ‘সারা জাতি আজ উদ্বিগ্ন। সামনে নির্বাচন। এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা হুমকির সম্মুখীন। সারা জাতি আজ এ হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্‌ঘাটনের দিকে তাকিয়ে আছে। এ রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে হবে, আগামীর দেশের জন্য, জাতির জন্য, নির্বাচনের জন্য।’

পরে আসামি আব্দুল হান্নান আদালতের অনুমতি নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবকে বলেছিলাম, শোরুমে নিয়ে চলেন তাহলে সব সত্যি বেরিয়ে আসবে। কিন্তু তারা নিয়ে যায়নি। থানায় এসে পুলিশকেও বলেছিলাম শোরুমে নিয়ে যেতে। বলেছিলাম তদন্ত করেন, সব বেরিয়ে যাবে।’

হান্নান বলেন, ‘আমি এ হোন্ডা মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছিলাম। তবে হাতে সমস্যা হওয়ায় পরিবার থেকে বাইক চালাতে নিষেধ করেছিল। এ জন্য বাসায় বাইকটি পড়ে ছিল। পড়ে থাকলে বাইকটি নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে একটি শোরুমে বিক্রি করি এবং আমি নাম চেঞ্জ করে দিবো বলেছিলাম। তারা দুই মাস আগে কল দিয়েছিল, কিন্তু অসুস্থ থাকায় মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য যেতে পারিনি।’

আদালতে হান্নানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না। শুনানি শেষে আদালত তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।