গ্রাহকসেবায় ২০ বছর পার করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটর বাংলালিংক। এ পথচলায় সঙ্গে ছিলেন অনেকে। হাজারো মানুষের হাজারো গল্প নিয়ে বাংলালিংকের প্রতিদিনের দিনবদলের যাত্রা চলছে। ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তেমনই কিছু গ্রাহকের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জানতে চেয়েছে তাঁদের অভিজ্ঞতা, স্মৃতি ও বাংলালিংকের সঙ্গে পথচলার গল্প।
এমনই একজন গ্রাহক দিনাজপুরের মো. আহসান হাবিব চৌধুরী। যিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বাংলালিংকের সঙ্গে আছেন। মো. আহসান হাবিব চৌধুরী বলেন, ‘১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। তখন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের লোগোটি ছিল বাঘের। মজার ব্যাপার হলো, বাংলালিংক তখন বাজারে এসেছে এবং তাদের লোগোটিতেও ছিল বাঘের ডোরাকাটা। এটিই আমাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে।’
আহসান হাবিব জানান, তিনি যখন বাংলালিংকের সিম কেনেন, তখন সিম কেনাটা এখনকার মতো সহজ ছিল না। নিজের বাসা থেকে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের একটি দোকানে গিয়ে সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে সিমটি কিনতে হয়।
সেই সময়েও অন্য টেলিকম অপারেটরগুলো থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন বাংলালিংকেই বেছে নিলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে আহসান হাবিব বলেন, ‘১৯৯৯ সালের দিকে অন্যান্য টেলিকম কিংবা ল্যান্ড অপারেটরগুলোর পালস সিস্টেম ছিল না। বাংলালিংকই প্রথম, যারা পালস সিস্টেম নিয়ে আসে, যা খুবই আকর্ষণীয় ছিল এবং আমার জন্য ছিল সহজ ও সাশ্রয়ী। তাই আমি শুরুতেই বাংলালিংককেই বেছে নিয়েছিলাম।’
আহসান হাবিব জানান, শুধু তিনিই নন, তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনও বাংলালিংকের সিম ব্যবহার করেন।
বাংলালিংকের বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে মো. আহসান হাবিব চৌধুরী বেশ সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি খেলা দেখতে খুব পছন্দ করি, তাই বাংলালিংকের টফির কথা না বললেই নয়। এখানে আমি সব ধরনের খেলা উপভোগ করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলালিংকের সিম পরিবর্তনের কথা এই ২০ বছরে আমি একবারের জন্যও ভাবতে পারিনি। কারণ, এটি আমার পরিচয়ের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাকে কারও কোনো প্রয়োজন হলে সবার আগে আমাকে এই নম্বরেই কল দেয়।’
মো. আবুল খায়ের বাশার বাংলালিংকের আরেকজন পুরোনো গ্রাহক। যিনি শুরু থেকে বাংলালিংকের সঙ্গে ছিলেন। বাংলালিংকের সঙ্গে পথচলার শুরুর দিকটি ঠিক কেমন ছিল? এ প্রসঙ্গে মো. আবুল খায়ের বাশার বলেন, ‘সেই সময়ে বাংলালিংকের নাম ছিল “সেবা”। তখন আমি মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম। তবে আমার কাছে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না। মেডিকেলের জার্নাল কিংবা ওয়েবসাইটগুলোতে পড়াশোনা করার জন্য একটি সিম আর মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। এই প্রয়োজন থেকেই বাংলালিংকের সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
আবুল খায়ের বাশার আরও বলেন, ‘যেহেতু আমি এত দীর্ঘ সময় ধরে বাংলালিংকের সঙ্গে আছি, তার মানে বাংলালিংক অবশ্যই এমন কোনো বাড়তি সুবিধা দেয়।’
মো. আবুল খায়ের বাশারের মতে, প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা বা পড়াশোনার ক্ষেত্রেই অথবা দেশের বাইরে রোমিংয়ের জন্য—বাংলালিংক সব সময়ের জন্য সেরা।
মো. আবুল খায়ের বাশারের মতো ২০ বছর ধরে বাংলালিংকের সঙ্গে যুক্ত আছেন আবাসন ব্যবসায়ী মো. মামুনুর রশীদ। তাঁর ব্যবসার সফলতার পেছনে বাংলালিংকের বিশেষ অবদান রয়েছে বলে জানান তিনি। মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বাংলালিংকের মাধ্যমেই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটি খবর পাই। আমার প্রথম সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় আমি বেশ কিছু কারণে হাসপাতালে থাকতে পারিনি। আর এই খবর আমি বাংলালিংকের মাধ্যমে পাই; যা আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর একটি।’
কেন আপনি বাংলালিংকের সঙ্গে পথচলা শুরু করলেন? উত্তরে মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সেই সময়ে বাংলালিংকের টিঅ্যান্ডটি ইনকামিং কল ছিল ফ্রি এবং অন্যান্য টেলিকম অপারেটরের তুলনায় কলরেট ছিল কম। যেহেতু গল্পটা ২০০০ সালের দিকের, তখন আমি কেবল চাকরিতে যোগ দিয়েছি। বাংলালিংককেই আমার সাশ্রয়ী মনে হয়েছিল। তাই আমি দীর্ঘ পথচলার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিই বাংলালিংককেই।’
বাংলালিংক শুধু একটি টেলিকম কোম্পানি নয়, এটি হয়ে উঠেছে প্রত্যেক গ্রাহকের জীবনের একটি অংশ। এমনই একজন গ্রাহক নাহিদ রহমান। যিনি একজন গৃহিণী ও ঘটক। নাহিদ রহমান জানান, তিনি এখন পর্যন্ত ৭১টি বিয়ের ঘটকালি করেছেন, আর তাঁর এই কাজে সব সময় পাশে পেয়েছেন বাংলালিংককে।
বাংলালিংক ব্যবহার করে খুশির কোনো খবর পেয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ রহমান বলেন, ‘বাংলালিংকের মাধ্যমে আমি আমার নাতি হওয়ার খবর পাই। এটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের খবর।’
নাহিদ রহমান আরও বলেন, ‘বাংলালিংকের সাহায্যে ঘরে বসেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছি এবং নামাজের সময়গুলো দেখতে পারি। যা আমার জন্য খুবই সুবিধাজনক।’
বাংলালিংকের কোন বিজ্ঞাপনটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশ দেশ দেশ, বাংলালিংক দেশ—বিজ্ঞাপনটি আমার ভীষণ প্রিয়।’
বিশ্বস্ততা মানে শুধু সংযোগ রাখাই নয়, এটি বিশ্বাস, প্রতিশ্রুতি এবং পথচলার গল্প। আর এই পথচলায় বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে থাকার জন্য সব গ্রাহকের কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বাংলালিংক।