Thank you for trying Sticky AMP!!

অধ্যাপক তাজমেরীর বিষয়ে নীরব থাকায় ঢাবি শিক্ষক সমিতির সমালোচনা সাদা দলের

অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সাদা দলের মানববন্ধন। ১৭ জানুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নীরব থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতারা।

এদিকে ঢাবি শিক্ষক সমিতি বলছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত না থাকায় তাজমেরী এস এ ইসলামের মামলার বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধনে সাদা দলের নেতারা শিক্ষক সমিতির ওই সমালোচনা করেন। অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সাদা দলের আহ্বায়ক ও ঢাবা শিক্ষক সমিতির সদস্য মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদের আমিও একজন নির্বাচিত সদস্য। অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর আমি শিক্ষক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমি কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি। এই মুহূর্তে শিক্ষক সমিতির কী করণীয় ছিল, তা আমি জানি। শিক্ষক সমিতির এই আচরণে আমি অত্যন্ত দুঃখ ও ঘৃণা প্রকাশ করছি।’

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি করার কারণেই অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামের মতো স্বনামধন্য একজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আজ নিশ্চুপ। ধিক্কার জানাই শিক্ষক সমিতির নেতাদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও ধিক্কার জানাই। তারা অন্ধ হয়ে গেছে। সমিতির নেতাদের বিবেক জাগ্রত করে সজাগ হওয়ার আহ্বান জানাই।’

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অধ্যাপক তাজমেরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান সাদা দলের নেতা ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে অধ্যাপক তাজমেরী আজ কারারুদ্ধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতি কী করছে? তারা নিজেদের আর কত ছোট আর হাস্যাস্পদ করবে? এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখি? ধিক্কার জানাই, তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। শিক্ষক সমিতিকে বলব, অধ্যাপক তাজমেরীর মুক্তির জন্য অবিলম্বে কর্মসূচি গ্রহণ করুন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব, নৈতিক কর্তৃত্ব ব্যবহার করে সাবেক সহকর্মীকে মুক্ত করার ব্যবস্থা নিন।’

সাদা দলের নেতা লায়লা নূর ইসলাম বলেন, ‘অধ্যাপক তাজমেরীর মতো স্বনামধন্য একজন শিক্ষককে নাশকতার মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লজ্জা-অপমানে আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্যও এটা অপমানের। চার দশক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক তাজমেরী। আমাদের জোর দাবি, প্রশাসন তাঁর মুক্তির ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও সাদা দলের নেতা এ এস এম আমানউল্লাহ এক সপ্তাহের মধ্যে অধ্যাপক তাজমেরীর জামিন না দেওয়া হলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন।

ঢাকা শিক্ষক সমিতির নিশ্চুপ থাকা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামুল হক ভূইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান কোনো শিক্ষক হলে আমরা তাঁর পক্ষে দাঁড়াই। অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম অনেক বছর আগে অবসরে গেছেন। তাই আমরা তাঁর জন্য দাঁড়াইনি। তাঁর বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে, সেই বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। তাই এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’

সাদা দলের সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক আখতার হোসেন খান, বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে মারধরসহ দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় হওয়া মামলায় অধ্যাপক তাজমেরীকে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।