Thank you for trying Sticky AMP!!

ছাদে ছাদে ডিজে পার্টির কান ফাটানো শব্দ, অতিষ্ঠ মানুষের ৯৯৯–এ ফোন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে চাকরির প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি থাকেন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের নন্দলাল লেনে একটি বাসা ভাড়া করে; ক্যাম্পাসের আরও সাতজন ছোট-বড় ভাই মিলে।

জাহিদুল আজ শুক্রবার সকালে ফোন করে এই প্রতিবেদকের কাছে চাইলেন পরামর্শ। তাঁর সমস্যা, বাসার আশপাশে বাজছে উচ্চ শব্দে গান; যা তাঁর হৃদ্‌রোগ সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আশপাশের বিভিন্ন বাড়ির ছাদে উচ্চ শব্দে গান বাজার কারণে পড়াশোনাও করতে পারছেন না।

জাহিদুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অতিষ্ঠ হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলাম। তাদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় জানানো হয়েছে। তারা স্থানীয় থানার নম্বর দিয়ে পুলিশের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এখন স্থানীয় থানায় অভিযোগ করে সমাধান পাব কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় ভুগছি।’

জাহিদুলেরর বাসার সদস্যদের মতোই এমন আরও কয়েকটি অভিযোগ সকাল থেকে প্রথম আলোকে জানানো হয়। পুরান ঢাকার স্থানীয় থানা-পুলিশও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ। তিনি থাকেন লক্ষ্মীবাজারে। তাঁর অভিযোগ, সকালে উচ্চ শব্দের গানে তাঁর ঘুম ভাঙে। তার মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে। এর ওপর উচ্চ শব্দের গানে ঘরে থাকাই তাঁর জন্য দায় হয়ে পড়েছে।

রাজু বলেন, এখন অনেকেরই পরীক্ষা চলছে। এমন সময় অনিয়ন্ত্রিতভাবে উচ্চ শব্দে গান বাজালে কারও পক্ষে পড়াশোনা করা সম্ভব নয়। আবাসিক এলাকায় এসবের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রয়োজন।

অন্য অভিযোগকারীরা বলেন, আজ পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তি উৎসব উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। এটি স্থানীয় লোকজনের কাছে সাকরাইন বা ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত।

ঐতিহ্য অনুযায়ী পুরান ঢাকায় উৎসবটি ঘুড়ি উড়িয়ে পালন করার কথা। সময়ের বিবর্তনে ঘুড়ি ওড়ানোর চেয়ে ছাদে ছাদে ডিজে পার্টি করে কান ফাটানো শব্দে বিদেশি গান বাজিয়ে উদ্‌যাপন করা হচ্ছে দিবসটি। এতে ঘুড়ি ওড়ানোর ঐতিহ্যবাহী দেশীয় সংস্কৃতি বিলুপ্তির মুখে। একই সঙ্গে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষও।

ঢাকা মহানগরের সূত্রাপুর থানায় অভিযোগ বিষয়ে খোঁজ নিলে ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আলী অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল থেকেই এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসতে শুরু করে। সকাল ৯টা থেকে আমার ডিউটি শুরু হওয়ার পর সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চার-পাঁচটি অভিযোগ পেয়েছি। অনেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানাচ্ছে। সরাসরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও জানাচ্ছে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় তিন-চারবার গিয়ে বুঝিয়ে আসা হয়েছে। এখন কেউ আবার একই কাজ করলে সাউন্ড বক্স জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।