প্রাচীরঘেরা টিনের ছাউনির একটা বাড়ি। বাড়ির পেছনটা ঝোপঝাড়ে ভরা। ফটক থেকে মূল বাড়িতে যাওয়ার উঠানের মতো জায়গাটা বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল, সাবধানে চলতে হয়। বাড়ির সামনে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। বৃষ্টিতে ভিজছে সেগুলো। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় গিয়ে দেখা গেল এ দৃশ্য। মনে হলো থানাটিই আছে নানা সমস্যায়। তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি জি বিশ্বাস বললেন, তাঁর থানায় কোনো সমস্যা নেই, সবকিছু চলছে ঠিকভাবেই।
আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা যাওয়ার সড়ক ধরে একটু এগোলেই ডান দিকে শেরেবাংলা নগর থানা। নগরবাসীর বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধা আরও সহজলভ্য করে তোলার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে মোহাম্মদপুর, কাফরুল ও তেজগাঁও থানার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় থানাটি। শুরু থেকে অস্থায়ী ভবনে চলছে থানার কার্যক্রম। থানার টিনের ছাউনির বাড়িটি মূল রাস্তা থেকে নিচু জমিতে হওয়ায় থানার সামনে বর্ষাকালে বেশির ভাগ সময়েই পানি জমে থাকে। ফলে থানায় আসতে হলে কাদাপানি পেরিয়েই ঢুকতে হয় সবাইকে। ভারী বৃষ্টি হলে কখনো কখনো থানার সামনের রাস্তায়ও হাঁটুপানি জমে যায়। তবে থানার ওসি এর কোনোটাকেই কোনো সমস্যা হিসেবে মনে করছেন না। তিনি বলেন, ‘এগুলো কোনো সমস্যা নয়। আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। টিনশেড ঘর বা জলাবদ্ধতাতেও কোনো সমস্যা নেই।’ আগামী মাসে শ্যামলীতে স্থায়ী ভবনে থানা স্থানান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
থানার ঠিক পেছনেই ঢাকা উত্তর ও পশ্চিম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডাম্পিং স্টেশন। ঝোপঝাড়ে ভরা জায়গাটিতে এখানে–সেখানে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পুরোনো যানবাহন। রিকশার পা রাখার জায়গায় কিংবা গাড়ির ভেঙে পড়া বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মধ্যে জমেছে পানি। এ এলাকায় থাকেন এমন অন্তত তিন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, বর্ষা মৌসুমে এই জায়গাটি মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়। জায়গাটি থানা–সংলগ্ন হলেও এটি পরিষ্কার করার প্রতি পুলিশের কোনো আগ্রহ ও উদ্যোগ নেই।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন উঠান বৈঠক করছি আমরা। মানুষের দরজায় দরজায় যাচ্ছি। কার কী সমস্যা সেটা জানার চেষ্টা করছি। উপপরিদর্শক, কনস্টেবল ও নারী সদস্য মিলে এ মুহূর্তে প্রায় ১০০ জন কাজ করছেন এ থানায়। জনবলের দিক থেকেও আমি সন্তুষ্ট।’
যদিও থানার আশপাশের এলাকায় ঘুরে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁর এ কথার সত্যতা পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ মানুষের বক্তব্য, থানার পক্ষ থেকে এ রকম কোনো উদ্যোগের সঙ্গে তাঁরা পরিচিত নন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, ‘মানুষ একেবারে বাধ্য না হলে থানায় যেতে চায় না। পুলিশের আচরণই এর জন্য দায়ী।’