
জঙ্গিদের কৌশল মোটামুটি একই। জঙ্গিরা যে বিষয়ে টার্গেট করে, সে বিষয়গুলো সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। সন্তানদের হঠাৎ বদলে যাওয়ার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে অভিভাবকদের। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি।
আজ রোববার সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) আয়োজনে সিটিটিসির সহযোগিতায় ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে গণমাধ্যমকর্মীর ভূমিকা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু। কর্মশালায় প্রশিক্ষক ছিলেন সিটিটিসির উপকমিশনার ডিসি মাহফুজুল হক, পুলিশ সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নাজমুল হক, সিটিটিসির সহকারী কমিশনার নাজমুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন ক্র্যাবের প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান।
সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেন। এর পর থেকে সিটিটিসি দেশে জঙ্গি দমনে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সফলতাও মিলেছে। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, তা বিশ্বে রোল মডেল। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ ৪০তম অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে কোনো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, প্রথমবারের মতো জঙ্গিবাদের ওপর ব্যাপক গবেষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৪টি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করা রিপোর্টারদের আরও যত্নশীল হওয়ার আহবান জানান। এ সময় সিটিটিসির পক্ষ থেকে জঙ্গিবাদ নিয়ে বিশেষ ফেলোশিপের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, জঙ্গিবাদ নিয়ে প্রতিবেদন করতে হলে অনেক পড়াশোনা করা দরকার। জঙ্গিবাদের প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে শব্দ চয়নে বিশেষ সতর্কতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, জঙ্গিবাদ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জঙ্গিবাদে জড়ানো ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আজকের কর্মশালা থেকে আমরা যা অর্জন করেছি, তা সামনে আমাদের কাজে সহায়তা করবে। জঙ্গিবাদ বা উগ্রতার ক্ষেত্রে আমরা যে রিপোর্টিং করি, সেখান থেকে কিন্তু জঙ্গিরাও বিভিন্ন তথ্য নেয়। ফলে আমরা শব্দ প্রয়োগে সতর্ক হব। কোন শব্দ ব্যবহার করলে তারা হিরো হয়ে যায়, সে বিষয়টিতে সতর্ক থাকব।’