হাত থেকে পড়ে গেল ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কেনা ডাল-চিনি

ট্রাক থেকে পণ্য নেওয়ার পরে হাত থেকে ডাল, চিনি পড়ে যায় আয়েশা আক্তারের
ট্রাক থেকে পণ্য নেওয়ার পরে হাত থেকে ডাল, চিনি পড়ে যায় আয়েশা আক্তারের

মেয়েকে কোলে নিয়ে ভরদুপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রির ট্রাকের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন মা আয়েশা আক্তার৷ চড়া রোদে প্রায় তিন ঘণ্টা  দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পরে বেলা আড়াইটার দিকে পণ্য কেনার সুযোগ পান এই নারী।

পলিথিনে মোড়ানো মসুর ডাল ও চিনির প্যাকেটটি নেওয়ার সময়  রাস্তায় পড়ে যায়। এক হাতে সন্তানকে কোলে নিয়ে, অন্য হাতে পণ্যগুলো নিচ্ছিলেন তিনি। পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পলিথিনের মোড়ক ফেটে ডাল, চিনি রাস্তায় থাকা ধুলাবালুর সঙ্গে মিশে যায়।

এমন পরিস্থিতিতে হতভম্ব হয়ে যান আয়েশা আক্তার। কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। কোলের সন্তানকে কার কাছে দেবেন, পণ্যগুলো কীভাবে তুলবেন। পাশে থাকা অন্য দুজন নারী তাঁকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। ট্রাক থেকে নতুন দুটি পলিথিন নিয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়া ডাল ও চিনি উঠিয়ে দেন ওই নারীরা। তবে সব আর তোলা যায়নি। পরে অবশ্য পরিবেশক তাঁকে আবার পরিমাপ করে পণ্য দুটি বুঝিয়ে দেন।

খিলক্ষেতের বাসিন্দা আয়েশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাল, চিনি পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। তবে যাঁরা উঠিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।’ পণ্য আবার মেপে দেওয়ায় পরিবেশককেও ধন্যবাদ দেন তিনি।

টিসিবির পণ্য নিতে লাইনে অপেক্ষা

খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এলাকায় পণ্য বিক্রি করেছে টিসিবির পরিবেশক মেসার্স বৈশাখী এন্টারপ্রাইজ। আজ একেকটি ট্রাকে ৫০০ লিটার করে সয়াবিন তেল দেওয়া হয়েছে। মসুর ডাল ও চিনির পরিমাণ ৫০০ কেজি থেকে বাড়িয়ে চিনি ৬৫০ কেজি এবং ডাল ৬০০ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৪৫০ কেজি। আগে ১ হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বরাদ্দ দেওয়া হতো৷

বেলা ১১টায় বিক্রি শুরু করে সোয়া ৩টার দিকে বিক্রি শেষ হয়। টিসিবির ট্রাক দাঁড় করানো হয় নিকুঞ্জ কল্যাণ সমিতি-সংলগ্ন খেলার মাঠের পাশে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের কেউ পণ্য না কিনে ফেরত যাননি। তবে লাইনে শেষের দিকে থাকাদের অনেকেই পেঁয়াজ কেনার সুযোগ পাননি। আর সবার শেষে যাঁরা লাইনে ছিলেন, তাঁরা শুধু মসুর ডাল ও চিনি কিনতে পেরেছেন।

ট্রাক থেকে তেল নিচ্ছেন একজন

পরিবেশক নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুরুতে প্রচুর লোক লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু আমরা টোকেন দিয়েছিলাম। যত পণ্য আছে, ততগুলোই টোকেন দেওয়া হয়েছে।’

টোকেন আগে দেওয়ার কারণে লাইনে কাউকে অযথা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি। তবে অনেকেই মাঝের সময় এসে খোঁজ নিয়ে ফিরে গেছেন।