মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলছে। ১৯ মে তোলা
মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলছে। ১৯ মে তোলা

মেট্রোরেলে কমলাপুর যেতে আরও অপেক্ষা, দেরি কেন

  • উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ঠিকাদার নিয়োগ করতে গিয়ে এ বিপত্তি।

  • ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি দর প্রস্তাব করেছে।

  • নতুন ঠিকাদার নিয়োগের পর কমলাপুরে মেট্রোরেল যেতে দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে।

মেট্রোরেলে চড়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাতায়াতে ঢাকাবাসীর অপেক্ষা বাড়ছে। আগামী মাসে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল চালুর কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে যাচ্ছে। ঠিকাদারের বেশি দর প্রস্তাবের কারণে আগামী বছরেও এই সোয়া কিলোমিটার পথ চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

মেট্রোরেল প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ঠিকাদার নিয়োগ করতে গিয়ে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসন অ্যান্ড টুব্রু যে দর প্রস্তাব করেছে, তা প্রাক্কলনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। অন্তর্বর্তী সরকার এত বেশি দরে কাজ করাতে আগ্রহী নয়। এ অবস্থায় বিকল্প ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ অথবা নতুন করে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মতিঝিল–কমলাপুর অংশের ভৌতকাজ, অর্থাৎ উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণের অগ্রগতি খুবই কম। অন্যদিকে রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজের (ইলেকট্রোমেকানিক্যাল) ঠিকাদার এখনো নিয়োগ দেওয়া যায়নি।

মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২২ সালে। উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় পরের বছর, ২০২৩ সালে। চুক্তি অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাসে এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে কাজের গতি কম হওয়ায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশের কাজের জন্য আলাদা দরপত্র আহ্বান না করে মতিঝিল-উত্তরা অংশে কাজ করা ঠিকাদারদের দিয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এ ক্ষেত্রে তা বাড়তি কাজ (ভেরিয়েশন) হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ভৌতকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। এর বাইরে রেললাইন, বিদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজে ভারতীয় ঠিকাদারকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রায় এক বছর চেষ্টা চালায় তারা। তবে তাতে সফল হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঠিকাদারের বেশি দর প্রস্তাবের বিষয়টি সামনে আসে।

মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২২ সালে। উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় পরের বছর, ২০২৩ সালে। চুক্তি অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাসে এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে কাজের গতি কম হওয়ায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া হিসাব বলছে, গত এপ্রিল পর্যন্ত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের ভৌতকাজের অগ্রগতি ৫০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

মেট্রোরেলের পুরো প্রকল্প এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ভৌতকাজে এমনিতেই দেরি হয়েছে। এখন আরও কিছুটা দেরি হলেও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমেই নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া উচিত।
অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট

প্রক্ষেপণ অনুসারে, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করার কথা। তবে বর্তমানে মেট্রোরেলে দিনে চার লাখের বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হলে দৈনিক যাত্রীসংখ্যা ৬ লাখ ৭৭ হাজারে উন্নীত হওয়ার কথা। বর্ধিত অংশ চালু হতে যত দেরি হবে, বাড়তি যাত্রী পরিবহনের সুযোগ হাতছাড়া হবে। যানজটের কারণে ওই পথের নিয়মিত যাত্রীদের দুর্ভোগও দীর্ঘ হবে।

কমলাপুরের একটি আবাসিক হোটেলে কাজ করেন কবির হোসেন। তাঁর বাসা ফার্মগেট এলাকায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন ফার্মগেট থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। মতিঝিলে নেমে ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। ফেরার সময়ও রিকশা করে মতিঝিলে আসেন।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ১৯ মে তোলা

কবির হোসেন বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনের দূরপাল্লার ট্রেনযাত্রীদেরও অনেকেই এভাবে ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করেন। মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত চালু হলে ট্রেনযাত্রী ও আশপাশের অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লোকজনের যাতায়াত সহজ হতো।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটির একটি সূত্র জানায়, রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থাসহ অন্যান্য কাজ করতে কম করে হলেও দেড় বছর সময় লাগবে। নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ কিংবা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান যাকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন, কমলাপুরে মেট্রোরেল যেতে দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে। অবশ্য এর মধ্যে ভৌতকাজ; অর্থাৎ স্টেশন ও উড়ালপথ নির্মাণ শেষ হয়ে যাবে। তবে সেগুলো অব্যবহৃত পড়ে থাকবে।

এখন ফার্মগেট থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। মতিঝিলে নেমে ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। ফেরার সময়ও রিকশা করে মতিঝিলে আসেন।
কবির হোসেন

দ্বিগুণের বেশি চাইছে ঠিকাদার

মেট্রোরেলের মতিঝিল–কমলাপুর পথের কাজ দুটি অংশে (প্যাকেজ) ভাগ করা হয়েছে। ভৌত অংশে রয়েছে উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণ। ট্রেন চালাতে হলে আরও সাত ধরনের কাজ করতে হবে। সেগুলো হলো রেললাইন, লিফট, এসকেলেটর, মনিটর, ট্রেনের দরজার সঙ্গে মিলিয়ে বাইরের দরজা, সংকেতব্যবস্থা ও স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায়ের যন্ত্রপাতি বসানো। এ ছাড়া রয়েছে ট্রেন চালানোর ও স্টেশন ভবনের জন্য সাবস্টেশনসহ বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা স্থাপন করা। এসব কাজ একটি প্যাকেজের আওতায় আনা হয়েছে। অবশ্য এ অংশের জন্য নতুন রেল বা কোচের প্রয়োজন নেই। কেননা, তা (২৪ সেট) আগেই আমদানি করা হয়েছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে লাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থাসহ অন্যান্য কাজ করেছে যৌথভাবে জাপানের মারুবেনি করপোরেশন এবং ভারতের লারসন অ্যান্ড টুব্রু। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বর্ধিত অংশের কাজ একই ঠিকাদারকে দিয়ে করানোর উদ্যোগ নেয়। তখন বলা হয়, একই কোম্পানি দিয়ে কাজটি না করালে উত্তরা-মতিঝিল অংশের সঙ্গে সমন্বয় করা জটিল হবে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন কথার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ট্রেন চালাতে হলে আরও সাত ধরনের কাজ করতে হবে। সেগুলো হলো রেললাইন, লিফট, এসকেলেটর, মনিটর, ট্রেনের দরজার সঙ্গে মিলিয়ে বাইরের দরজা, সংকেতব্যবস্থা ও স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায়ের যন্ত্রপাতি বসানো। এ ছাড়া রয়েছে ট্রেন চালানোর ও স্টেশন ভবনের জন্য সাবস্টেশনসহ বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা স্থাপন করা। এসব কাজ একটি প্যাকেজের আওতায় আনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কমলাপুর অংশে লাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থাসহ অন্যান্য কাজ মারুবেনি করপোরেশনকে ছাড়াই লারসন অ্যান্ড টুব্রু একাই করার আগ্রহ দেখায়। তাদের দর প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রায় এক বছর পর গত বছরের জুলাই মাসে প্রস্তাব জমা দেয় তারা। তাদের প্রস্তাবিত দর ৬৪৫ কোটি টাকা। অথচ এ কাজের জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। লারসন অ্যান্ড টুব্রু যখন দর প্রস্তাব করে, তখন দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল। ফলে আওয়ামী লীগ সরকার এর অনুমোদন দিতে পারেনি।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিএমটিসিএলের পরিচালনা পরিষদের সভায় বিষয়টি তোলা হয়। বাড়তি ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগে আগ্রহ দেখায়নি এবং ব্যয় কমানোর তাগিদ দেয় পরিচালনা পরিষদ। এরপর প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তিন দফা ভারতীয় ঠিকাদারের সঙ্গে দর–কষাকষি করে। সর্বশেষ ৫৯০ কোটি টাকা চূড়ান্ত দর প্রস্তাব করে লারসন অ্যান্ড টুব্রু। তবে তা–ও প্রাক্কলিত ব্যয়ের দ্বিগুণের বেশি।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজের জন্য ঘিরে রাখায় সড়কের বড় অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ১৯ মে তোলা

গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে আবার পরিচালনা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরিষদ বিকল্প ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ অথবা নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা বলেছে।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ভৌতকাজ করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি। তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ৫১১ কোটি টাকার। তারা সহযোগী হিসেবে নিয়েছে বাংলাদেশের ম্যাকডোনাল্ড স্টিলকে।

ইতাল-থাই কোম্পানি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের ভৌতকাজও করেছে। এ ছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভৌতকাজ করেছিল জাপানের টেক্কেন ও সুমিতমো মিৎসুই করপোরেশন। কমলাপুরের বর্ধিত অংশের ভৌতকাজের জন্য তাদের কাছেও দর প্রস্তাব আহ্বান করেছিল প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

ডিএমটিসিএলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কমলাপুর অংশের ভৌতকাজ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে না হলেও একাধিক প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব করার কারণে প্রতিযোগিতা হয়েছে। কিন্তু রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থাসহ অন্য কাজের প্যাকেজে লারসন অ্যান্ড টুব্রু একমাত্র দরদাতা হওয়ায় বেশি ব্যয়ের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।

পদাধিকার বলে ডিএমটিসিএলের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিযোগিতা ছাড়া এভাবে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ঋণদাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

মেট্রোরেলের পুরো প্রকল্প এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ভৌতকাজে এমনিতেই দেরি হয়েছে। এখন আরও কিছুটা দেরি হলেও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমেই নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া উচিত।
বুয়েট পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান

উন্মুক্ত দরপত্রে ঠিকাদার নিয়োগের পরামর্শ

মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ চালু করা হয় ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর চালু করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের। আর প্রকল্প প্রস্তাবে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর সময় নির্ধারণ করা হয় আগামী জুন মাস।

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক নাম এমআরটি লাইন-৬। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দূরত্ব ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার, অর্থাৎ বর্ধিত অংশের দূরত্ব ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত স্টেশনসংখ্যা ১৭।

গত এপ্রিল পর্যন্ত মতিঝিল থেকে কমলাপুর অবধি সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল প্রকল্পের ভৌতকাজের ৫০ দশমিক ৯৭ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ১৯ মে তোলা

২০১২ সালে অনুমোদনের সময় মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার কাছ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের পুরো প্রকল্প এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ভৌতকাজে এমনিতেই দেরি হয়েছে। এখন আরও কিছুটা দেরি হলেও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমেই নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া উচিত। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাঁর কাছেও লারসন অ্যান্ড টুব্রুর দর প্রস্তাব বেশি মনে হয়েছে। জনগণের করের এক টাকাও যদি বাঁচানো যায়, সেই চেষ্টা করা উচিত।