
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করতে বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে তারা।
এ বি পার্টির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের নেতারা আজ বুধবার মধুর ক্যানটিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
মুহাম্মদ প্রিন্স বলেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পরও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। একদিকে খুনিরা পুলিশের সহায়তায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকের জীবন নিরাপত্তাহীন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রশাসনের নাকের ডগায় মাদক ও জুয়ার আসর বসছে, নারী নিপীড়ন, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ মেধাবী ছাত্র সাম্যকে জীবন দিতে হয়েছে।
আর কত ছাত্রের জীবন গেলে এই ক্যাম্পাস নিরাপদ হবে—সেই প্রশ্ন তুলে ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাদের মদদে মাদকের কারবার চলছে? কেন পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে? যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এই মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকে, আমরা তাদের অবিলম্বে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সাত দফা দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলো হলো:
# মেধাবী ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িত সব আসামি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
# শাহবাগ মোড় থেকে হাইকোর্টের শিক্ষা চত্বর পর্যন্ত একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
# বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের রাস্তাকে অভ্যন্তরীণ সড়ক হিসেবে ঘোষণা করে এর নিয়ন্ত্রণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে।
# সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে লাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেট অবিলম্বে বন্ধ করে দিতে হবে।
# ক্যাম্পাসের ভেতরের সব ভবঘুরেকে উচ্ছেদ এবং তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্যাম্পাসের রাস্তায় শুধু নিবন্ধিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করতে পারবে।
# নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হলের প্রবেশপথ এবং আশপাশে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
# বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে এবং টিএসসির অনিবন্ধিত ও ভাসমান দোকানপাট বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আকিব হাসান, প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, ছাত্রপক্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ জিহাদ ভূইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেরীন আফরোজ মাইশা, ফারজানা আক্তার মিতু, শাশ্বত হকসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।