Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রথম অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামকে মানুষ মনে রাখবে

সারাহ ইসলাম

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রসঙ্গ উঠলেই সারাহ ইসলামের নাম মানুষের মনে পড়বে। ২০ বছর বয়সী সারাহ রোগশয্যায় থেকে নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অন্যকে দান করার ইচ্ছা মাকে জানিয়েছিলেন। তাঁর দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া চার ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন দেশের চিকিৎসকেরা।

সারাহর দান করা দুটি কিডনির একটি বিএসএমএমইউতে একজন কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অন্যটি বিএসএমএমইউ থেকে কিডনি ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে একজন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সারাহর দুটি কর্নিয়া আজ দুজনের চোখে লাগানো হয়।

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ‘মৃত ঘোষিত ব্যক্তির’ অঙ্গ প্রতিস্থাপন করলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিডনি ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকেরা।

দেশে প্রথম এ ধরনের অস্ত্রোপচার উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএসএমএমইউতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে দুই প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকেরা ছাড়াও সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে শবনম সুলতানা বলেন, ‘সারাহ সত্যি সত্যি স্বর্গীয় সন্তান ছিল। যেখানে যেত, ব্যবহার দিয়ে সবাইকে মোহিত করে রাখত। ও বলেছিল, ‘‘আমার সবকিছু গবেষণার জন্য দিয়ে দিতে পারো মা।’’ সারাহর ইচ্ছা ছিল, ওর ব্রেন নিয়ে গবেষণা হোক।’

‘বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় যুগান্তকারী অর্জন ও সাফল্য’ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএসএমএমইউতে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউর উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১০ মাস বয়সে সারাহর দুরারোগ্য টিউবেরাস স্ক্লেরোসিস রোগ শনাক্ত হয়। এ রোগ নিয়ে তিনি ১৯ বছর ধরে লড়াই করছিলেন। সম্প্রতি বেসরকারি একটি হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। ১৩ জানুয়ারি তাঁকে বিএসএমএমইউর আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় চিকিৎসকেরা সারাহর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। চিকিৎসকেরা প্রথমে তাঁর দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া অপসারণ করেন।

একটি কিডনি বিএসএমএমইউতে একজন কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অন্য কিডনি বিএসএমএমইউ থেকে কিডনি ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে একজন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সারাহর দুটি কর্নিয়া আজ দুজনের চোখে লাগানো হয়। একজনের অস্ত্রোপচার হয় বিএসএমএমইউতে, অন্যজনের সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে।

দেশে এতকাল নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু সব সময় নিকটাত্মীয়ের কিডনি পাওয়া যায় না। নিশ্চিতভাবে জীবনের আশা নেই, এমন ব্যক্তির কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপনের কথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বেশ কয়েক বছর ধরে বলে আসছেন। এসব বিষয়ে রীতিনীতি ও আইন আছে। সব মেনেই বিএসএমএমইউ ও কিডনি ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ সারাহ ইসলামের কিডনি ও কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য শেষ করার আগে বিএসএমএমইউর উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের নাম চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁর এ ত্যাগের মাধ্যমে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি হবে। অনেক মানুষ নতুন জীবন পাবে।’

Also Read: দেশে প্রথম মরণোত্তর দানের কিডনি দুজনের দেহে প্রতিস্থাপন