
বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের হুঁশিয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম।
বেসরকারি এই শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানাতে আজ রোববার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান সাদিক কায়েম। সেখানে তিনি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের ভোগ বিলাসের জন্য সরকারে পাঠানো হয়নি। যদি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে না নেন, তাহলে ফ্যাসিবাদ, খুনি হাসিনা এবং তাঁর দোসরদের যে পরিণতি হয়েছিল, তার চেয়ে খারাপ অবস্থা আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ (সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকার আজ বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে ভুখা মিছিল করেন তাঁরা। পরে শহীদ মিনারে অবস্থানে ফিরে যান।
সন্ধ্যায় সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে ডাকসুর একটি প্রতিনিধিদল শহীদ মিনারে যায়। শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ডাকসু ভিপি বলেন, শিক্ষকেরা আট দিন ধরে আন্দোলন করছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও জ্বালানি উপদেষ্টা শিক্ষক। অথচ তাঁরা শিক্ষকদের কথাগুলো বুঝতে পারছেন না। ২০% বাড়িভাড়ার জন্য শিক্ষকদের কেন দিনের পর দিন শহীদ মিনারে পড়ে থাকতে হবে?
সাদিক কায়েম বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল ইনসাফভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। অন্তর্বর্তী সরকার এই স্পিরিট নিয়ে গঠিত হলেও তাদের কার্যক্রমে এখন সেই মনোভাব দেখা যাচ্ছে না।’
‘আগুন নিয়ে খেলবেন না। অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন। না হলে যে ঝড় বইবে, তা আপনারা সামলাতে পারবেন না,’ সরকারকে হুঁশিয়ার করেন সাদিক কায়েম।
ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা যে বেতন পান, উন্নত বিশ্বের সুইপাররাও এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বেতন পান।
ডাকসু নেতাদের সঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজীও বক্তব্য দেন। তিনি দাবি করেন, সচিবালয়ে আমলারা প্রশিক্ষণের নামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বাজেট রেখেছেন। অথচ শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবি নিয়ে গেলে সরকারের কাছে অর্থ নেই বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
দেলোয়ার হোসেন আজিজী ঘোষণা দেন, ঢাকায় অবস্থানের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক–কর্মচারীদের যে কর্মবিরতি চলছে, তা দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে।