
তিন দফা দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভরত প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা আজ রাত আটটার মধ্যে শাহবাগে এসে সমস্যার সমাধান করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। তা করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেওয়া, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা এবং দশম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়ার দাবিতে আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন এই শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।
অবরোধ চলাকালে সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সহসভাপতি শাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আল্টিমেটাম দিচ্ছি, রাত আটটার মধ্যে এসে আমাদের সঙ্গে বসে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে আপনাদের। নইলে আমরা এর চেয়ে আরও কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
শাকিল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা ছয় মাস ধরে দাবি জানিয়ে এলেও সরকার এসব দাবি পূরণে কাজ করেনি। সে কারণে সরকার তাঁদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।
এ সময় প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালি উল্লাহ বলেন, ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে সরকার। তাঁরা সারা দিন সচিবালয়ে থাকলেও কারও সঙ্গে বসতে পারেননি। এরপর তাঁরা বাধ্য হয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শাকিল আহমেদ বলেন, রংপুরে প্রকৌশলী রোকনকে আটকে রেখে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এটাই তাঁদের প্রথম দাবি। এ ছাড়া আগে তাঁরা যে তিন দফা দাবি জানিয়েছেন, সেগুলো মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা রাজধানীর ব্যস্ততম শাহবাগ মোড় অবরোধ করায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ। বেলা তিনটা থেকে অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যেসব বাস চলাচল করে, সেগুলো শাহবাগ মোড়ে এসে ফিরে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যেসব যানবাহন শাহবাগ হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যায়, সেসব যানবাহনকে শাহবাগ মোড় পার হতে দেওয়া হচ্ছে না। কাঁটাবন মোড় হয়ে শাহবাগের দিকে আসা গাড়িগুলো রাস্তায় আটকে আছে।
সন্তানের চিকিৎসার জন্য শাহবাগে অবস্থিত বারডেম হাসপাতালে এসেছিলেন তাসমিয়া রহিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে হাসপাতালে আসতে গিয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে এসে তিনি শোনেন যে বাস আর সামনে যাবে না। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন হচ্ছে। পরে সন্তানকে কোলে নিয়ে হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছেন।
তাসমিয়া রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আন্দোলন হচ্ছে। এভাবে একটা শহর চলতে পারে না। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।