Thank you for trying Sticky AMP!!

গোখরো সাপের খামার গড়েছিলেন তিনি

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বৈদ্যনাথপুরে শাহাদৎ হোসেনের সাপের খামার থেকে গোখরো জাতের ৪৯টি সাপ জব্দ করা করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে তোলা ছবি। ছবি: প্রথম আলো

পদ্মগোখরো ও গোখরো জাতের ৪৯টি সাপ নিয়ে অবৈধভাবে খামার গড়ে তোলার দায়ে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বৈদ্যবেলঘরিয়া গ্রামের শাহাদাৎ হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রশিক্ষণ না নিয়ে এবং কোনো ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়া ছয় মাস ধরে তিনি খামারটি পরিচালনা করছিলেন।

রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পরিবেশ কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মীরা গতকাল বুধবার বিকেলে শাহাদাৎ হোসেনের সাপের খামারে অভিযান চালান। এ সময় টিনের চালার একটি ঘর থেকে বিষধর পদ্মগোখরো ও গোখরো জাতের ৪৯টি সাপ এবং ৩৬টি সাপের ডিম উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় খামারের মালিক শাহাদাৎ হোসেনকে। পরে সাপ ও ডিম রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের জিম্মায় নেওয়া হয়। এ সময় নলডাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির, বন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, সাপ বিশেষজ্ঞ রোমন আলী, নাটোরের বন কর্মকর্তা সত্যনাথ সরকার, বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তার সম্পাদক ফজলে রাব্বি ও নলডাঙ্গা থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় স্কাউট লিডার ও পরিবেশকর্মী মিমনুর রহমান বলেন, শাহাদাৎ হোসেনের সাপের খামারের চারপাশে আবাদি জমি ও ঝোপঝাড় আছে। সেখানে কৃষিশ্রমিকেরা কাজ করেন। তাঁরা সাপ নিয়ে তাঁদের ভীতির কথা জানান। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়।

খামারের মালিক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘শখের বসে আমি পাঁচটা সাপ পালন শুরু করি। পরে সেগুলো থেকে বাচ্চা হয়ে সাপের সংখ্যা বাড়ে। এ পর্যন্ত সাবধানের সঙ্গে সাপ পুষেছি। কোনো দিন দুর্ঘটনা ঘটেনি।’ সাপের খামার করতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনুমতি নেওয়ার কথা আমার জানা ছিল না।’

পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সাপ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শাহাদাৎ হোসেনের খামারে নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদি ছিল না। এমনকি বিদ্যুতের ব্যবস্থাও ছিল না। সাপ পালনের জন্য তাঁর কোনো প্রশিক্ষণ বা পূর্ব অভিজ্ঞতাও নেই। প্রাকৃতিক নিয়মে সাপের বংশবিস্তার ঘটছিল। যেকোনো সময় স্থানীয় লোকজন এসব সাপের কারণে বিপদে পড়তে পারতেন।

নলডাঙ্গার ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনুমতি না নিয়ে খামার গড়ে তোলার দায়ে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুসারে শাহাদাৎ হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে খামারটি সিলগালা করা হয়েছে। উদ্ধার করা সাপ ও ডিম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।