Thank you for trying Sticky AMP!!

ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীকে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির এক কিশোরীর বাল্যবিবাহ হয়েছে। তবে বাল্যবিবাহ হওয়ায় কোনো দালিলিক প্রমাণ রাখেনি স্থানীয় কাজি অফিস। অভিযোগ উঠেছে, লালমনিরহাট সদর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) এই বিয়ের আয়োজন করেছেন।

তবে বিয়ের কয়েক দিন পর বর ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই কিশোরীর পরিবারকে জানানো হয়, দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। বিয়ের পর বর ও কনের তালাক হয়ে গেছে। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর কিশোরীর পরিবার বিষয়টি লিখিতভাবে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানায়। একই দিন ডাকযোগে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজিকে জানানো হয়েছে ঘটনাটি।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, সদর উপজেলার শাহীন আলম (২৪) ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিশোরীটি রাজি না হওয়ায় শাহিন ওই কিশোরীর ছবি সম্পাদনা করে আপত্তিকর ভিডিও বানান। অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখান তিনি। একপর্যায়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শাহীন। এতে কিশোরীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে শাহীন আলম কিশোরীকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতে থাকেন। গত ২৫ জুলাই লালমনিরহাট শহরের একটি ক্লিনিকে কিশোরীর গর্ভপাত করা হয়। এরপর তিনি কিশোরীকে ক্লিনিকে রেখে পালিয়ে যান। পরে এক ভ্যানচালকের সহায়তায় বাড়িতে ফেরে ওই কিশোরী পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওই কিশোরীর বাবা গত ১১ আগস্ট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানার এসআই মাইনুল ইসলাম কিশোরীকে শাহীনের সঙ্গে বিয়ের পরামর্শ দেন।

এরপর এসআই মাইনুলের নির্দেশে গত ২৩ আগস্ট মহেন্দ্রনগরের কাজি অফিসে শাহীনের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের প্রমাণ হিসেবে কোনো কাবিননামা করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করলে কাজি শহীদুল ইসলাম মেয়ের বাবাকে জানান, মেয়ের বয়স কম, তাই কাবিননামা এখন দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে পরে তুলে নেওয়া হবে, আশ্বাস দিয়ে কাজি অফিস থেকেই ওই কিশোরীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক দিন পর শাহীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়েতে কোনো কাবিননামা সই হয়নি। তাই শাহীনের সঙ্গে ওই কিশোরীর তালাক হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহীন আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি ‘এসআই স্যার আমাকে বিয়ে করতে বলেছিলেন, তাই করেছি’ বলে ফোন কেটে দেন। কাজি অফিসের শহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

এসআই মাইনুল ইসলাম প্রথমে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না।

তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পর তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছেন। কিশোরী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল বলে গ্রামবাসীর পরামর্শে মাইনুল ইসলাম বিয়ের কথা বলেছিলেন।

কিশোরীর বাবার অভিযোগের বিষয়ে লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় এসআই মাইনুল বা অন্য কারও বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।