Thank you for trying Sticky AMP!!

যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূর চুল কর্তনের অভিযোগ

যৌতুকের দাবিতে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে তাঁর মাথার চুল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেটে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার রাতে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর নাম ইতি বেগম। তিনি বেতকাপা গ্রামের মোস্তফা মিয়ার স্ত্রী। গত শনিবার রাতে পুলিশ গৃহবধূকে উদ্ধার এবং তাঁর শাশুড়ি মঞ্জুয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। তবে তাঁর স্বামী মোস্তফা মিয়া এবং শ্বশুর ফেলু মিয়া পলাতক।

পুলিশ জানায়, প্রায় তিন বছর আগে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা গ্রামের ফেলু মিয়ার ছেলে মোস্তফা মিয়ার সঙ্গে সাঘাটা উপজেলার টেপা পদুমশহর উল্যাপাড়া গ্রামের প্রয়াত আমীর উদ্দিনের মেয়ে ইতি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মোটা অঙ্কের যৌতুক চেয়ে প্রায়ই মোস্তফা ও তাঁর মা-বাবা ইতিকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। এ বিষয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। গত বুধবার রাতে ইতিকে একটি ঘরে আটকে রেখে যৌতুক হিসেবে ১০ হাজার টাকা আনতে বলেন স্বামী মোস্তফাসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কিন্তু টাকা আনতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা ইতিকে মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে তাঁরা গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে মাথার চুল কেটে ঘরে বন্দী করে রাখেন। এ ঘটনার কয়েক দিন পর ঢাকায় অবস্থানরত ইতির মা আকলিমা বেগম খবর পান। তিনি ঢাকা থেকে গত শনিবার বাড়ি ফিরে জামাতার বাড়ি বেতকাপা গ্রামে যান। সেখানে গেলে মোস্তফা ও তাঁর মা-বাবা তাঁকে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।

খবর পেয়ে শনিবার রাতে পুলিশ বেতকাপা গ্রামে গিয়ে ইতিকে উদ্ধার এবং তাঁর শাশুড়ি মঞ্জুয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় গৃহবধূ ইতি বেগম বাদী হয়ে পলাশবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়। পরে ইতিকে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ইতি বেগম গতকাল রোববার অভিযোগ করেন, ‘টাকার জন্য সব সময় ওরা আমাকে মেরেছে। আমার কোনো দোষ নাই। আমি বিচার চাই।’ তাঁর মা আকলিমা বেগম অভিযোগ করেন, ‘যৌতুকের জন্য ওরা আমার মেয়েকে প্রায়ই মারধর করত। আমি সালিস ডেকে বিচার চাই। কিন্তু ওরা সেই বিচার মানেনি। গত বুধবার রাতে আমার মেয়ের মাথার পেছনের চুল কেটে দেয় ওরা। আপনারা ওদের বিচার করেন।’

পুত্রবধূকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে থানা হেফাজতে ইতির শাশুড়ি মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। আমরা ওকে (ইতি) মারিনি, চুল কাটি দিই নাই।’

পলাশবাড়ী থানার ওসি হিপজুর আলম মুন্সি বলেন, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ইতির শাশুড়িকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।