Thank you for trying Sticky AMP!!

সেই তুফানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সাড়ে চার কোটি টাকার বেশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বগুড়ার সেই তুফান সরকার ও তাঁর ভাই মতিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার বগুড়া সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের (দুদক) সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় এ মামলা করেন।

তুফান বগুড়ার আলোচিত এক ধর্ষণ মামলায় কারাগারে রয়েছেন। আর তাঁর ভাই মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে উল্লেখ করা হয়, তুফান সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। এরপর গত মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই দুদকে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকার স্থাবর ও ৩৮ লাখ ৯ হাজার ১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেওয়া হয়। সম্পদ যাচাই করে দুদক তুফানের জমি, বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংকে সঞ্চয়সহ ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার মূল্যের সম্পদের সন্ধান পায়। দুদকে জমা দেওয়া নথিতে তুফান ২৯ লাখ ৭৯ লাখ ৮৭০ টাকার মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন। তাঁর আয়ের বৈধ কোনো উৎসও নেই। তিনি কোনো আয়কর রিটার্ন দাখিল কিংবা কোনো খাতের আয় প্রদর্শন ও আয়কর পরিশোধ করেননি। তাঁর স্ত্রী তাসনিম সরকারেরও কোনো আয়ের উৎস নেই। তিনি জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ টাকা অর্জন করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ২০০৪ সালের ২৭ ধারা (১) শাস্তিযোগ্য অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক। পরে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ ও ২৭ (১) ধারায় একটি মামলা হয়েছে।

এদিকে গত মার্চ মাসে আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়। ওই মাসেই তিনি ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৭১ হাজার ৮৮১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেন। সম্পদ যাচাইকালে দুদক তাঁর নামে স্থাবর ও অস্থাবরসহ ৫ কোটি ৮০ লাখ ৩ হাজার ৯০৪ টাকার সন্ধান পায়। দুদকে দাখিল করা হিসাবে তিনি ৩ কোটি ৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৪ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন। সম্পদের হিসাবে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ সালের একই ধারায় মামলা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিন সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সম্পদের হিসাবের ক্ষেত্রে মিথ্যা কোনো তথ্য উপস্থাপন করিনি। সব সম্পদের ফাইল রয়েছে।’

ভালো কলেজে ভর্তির করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই এক ছাত্রীকে এক বাসায় নিয়ে যান সে সময়ের বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক (বর্তমানে বহিষ্কার) তুফান সরকার। পরে সেখানে ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তুফান সরকারের স্ত্রীর বড় বোন কাউন্সিলর মারজিয়া গত বছরের ২৮ জুলাই ওই মেয়ে এবং তাঁর মাকে বাড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ মা-মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে মারজিয়া হাসান এবং পরে তুফান সরকারসহ সহযোগীদের আটক করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ওই রাতেই মামলা করেন। এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন তুফান সরকার। ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত হত্যা, হত্যাচেষ্টা, মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের ছয়টি মামলার আসামিও তুফান সরকার।

এ ঘটনায় পৃথক দুই মামলায় তুফান সরকার, মারজিয়া হাসানসহ আটজন কারাগারে রয়েছেন।