অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায় নাগরিকের ব্যক্তিগত বিভিন্ন উপাত্তের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তার ওপর অধিকার দেওয়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায় নাগরিকের ব্যক্তিগত বিভিন্ন উপাত্তের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তার ওপর অধিকার দেওয়া হয়েছে

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ: কর্তৃপক্ষের অবাধ ক্ষমতায় অপব্যবহারের ঝুঁকি

অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায় ব্যক্তির উপাত্তের ওপর অধিকার এবং তা ব্যবহারের বিধান রাখা হয়েছে। তবে বহুল আলোচিত এই অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়ায়ও সরকারের নির্বাহী বিভাগের অবাধ ক্ষমতা রয়ে গেছে, যাতে অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি হবে।

এ ছাড়া অনুমোদিত খসড়ায় উপাত্ত মজুতকরণের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার গত বৃহস্পতিবার অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেয়। এতে নাগরিকের ব্যক্তিগত বিভিন্ন উপাত্তের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তার ওপর অধিকার দেওয়া হয়েছে।

উপাত্ত সুরক্ষার বিধান করার জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৯ সাল থেকে কাজ করছিল। তারা একাধিক খসড়াও করেছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের এপ্রিলেও তারা একটি খসড়া করেছিল।

অন্তর্বর্তী সরকার এসে উপাত্ত সুরক্ষার বিধান নিয়ে কাজ শুরু করে। অনুমোদিত খসড়ায় উপাত্তের সংজ্ঞা, সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অধ্যাদেশটি জারির ১৮ মাস পর তা কার্যকরের কথা বলেছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের আইন প্রয়োগে আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন।

অধ্যাদেশটি কোনো ব্যক্তি, উপাত্ত জিম্মাদার, প্রক্রিয়াকারী বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত দায়িত্ব পালনকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করে বাংলাদেশি নাগরিকদের উপাত্ত যাঁরা প্রক্রিয়া করেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ মেটা-গুগলের মতো প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো এর আওতায় আসবে। যদিও এসব প্রতিষ্ঠানকে বিধান লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তি প্রদানের বিষয়টি অনুমোদিত খসড়ায় আছে, তবে কিছু অস্পষ্টতার কারণে তাদের দায় এড়ানোর রাস্তাও খোলা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার তার সর্বশেষ খসড়ায় উপাত্ত সুরক্ষা বিধান লঙ্ঘনের জন্য কোনো ফৌজদারি অপরাধ রাখেনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত খসড়ায় প্রশাসনিক জরিমানাসহ কারাদণ্ডের বিধান আছে। অর্থাৎ মেটা-গুগলের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো বিধান লঙ্ঘন করলে শাস্তি ভোগ করবে।

অপব্যবহারের ঝুঁকি

জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। কর্তৃপক্ষের আদেশ মানতে সবাই বাধ্য।

অনুমোদিত খসড়ার ধারা ২১ (৫)-এ বলা আছে, উপাত্ত নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে উপাত্ত-জিম্মাদার (যিনি একক বা যৌথভাবে উপাত্ত প্রক্রিয়া করেন, তত্ত্বাবধান করেন) যে পদ্ধতিতে কাজটি করছেন, তা উপাত্তধারীর জন্য ক্ষতিকর, তবে কর্তৃপক্ষ যেকোনো নির্দেশ দিতে পারবে। আর জিম্মাদার তা মানতে বাধ্য।

ধারা ২৩ অনুযায়ী, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার জন্য সব গুরুত্বপূর্ণ জিম্মাদারকে প্রধান উপাত্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, ‘গুরুত্বপূর্ণ জিম্মাদার’—এটা কীভাবে নির্ধারিত হবে। এ ছাড়া বলা হয়েছে, প্রধান উপাত্ত কর্মকর্তা সরকারি কর্তৃপক্ষ দ্বারা নির্ধারিত স্থানে কাজ করবেন, দায়িত্ব পালন করবেন। এতে প্রশ্ন ওঠে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত উপাত্ত কর্মকর্তা কার অধীন কাজ করবেন। আর সেই উপাত্তে সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রবেশের সুযোগ থাকবে কি না।

ধারা ২৬-এ কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রসঙ্গে বলা আছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জিম্মাদারের কাছে থাকা মজুতকৃত ব্যক্তিগত উপাত্তে বা প্রক্রিয়াকরণের স্থানসহ যন্ত্রপাতি বা যেকোনো স্থাপনায় প্রবেশের সুযোগ পাবে। এই বিধানে অপব্যবহারের সুযোগ তৈরির আশঙ্কা আছে। তা টেক জায়ান্টসহ বিদেশি কোম্পানির কাছে থাকা উপাত্তে কর্তৃপক্ষের এই ক্ষমতা প্রয়োগের চ্যালেঞ্জও তৈরি হবে।

উপাত্ত সুরক্ষার জন্য স্বাধীন সংস্থা গঠনের আলোচনা বিগত সরকারের সময়ও হয়েছিল। কিন্তু কোনো সরকারই স্বাধীন সংস্থা গঠনের বিষয়টি রাখেনি। এতে রাজনৈতিক সরকারের সময় ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

ধারা ২৪-এ বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা, অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত, তদন্তের ক্ষেত্রে ব্যক্তি উপাত্ত গ্রহণে কোনো সম্মতির প্রয়োজন হবে না। উল্লিখিত বিষয়গুলোর স্পষ্ট ব্যাখ্যা না করে এ অধ্যাদেশ প্রয়োগ করা হলে অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকবে।

ধারা ৫০ অনুযায়ী, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃপক্ষকে যেকোনো নির্দেশনা দিতে পারবে।

আবার ধারা ৫৫-তে বলা আছে, উপাত্তপ্রক্রিয়া, মজুত, ধারণ বা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে সরকার যেকোনো আদেশ জারি করতে পারবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বিধানে কোনো বিচারিক পর্যবেক্ষণ না থাকায় নির্বাহী ক্ষমতার অবাধ সুযোগ তৈরি হবে। আর সে ক্ষেত্রে অপব্যবহারের ঝুঁকিও থাকবে।

অনুমোদিত খসড়ায় আছে, অভিযোগকারীর বক্তব্য শুনে সাইবার ট্রাইব্যুনালের যদি মনে হয়, অভিযোগ আমলে নেওয়ার মতো, তবে তা তদন্ত হবে। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষ বা সাইবার ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে বিচারিকভাবে আপিল করার কোনো জায়গা আছে কি না, তা অস্পষ্ট।

কোম্পানির দায় ও ছাড়

ধারা ৪৯-এ কোম্পানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘিত হলে কোম্পানির বোর্ডের যেকোনো সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পদধারী কোনো ব্যক্তি, কর্মচারীকে প্রশাসনিক জরিমানাসহ কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।

আবার ধারা ১৫ অনুযায়ী, উপাত্ত জিম্মাদার ও প্রক্রিয়াকারীর দায়িত্ব-কর্তব্য প্রতিপালনে যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচেষ্টা বা ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত থাকে, তাহলে কোনো কিছু প্রযোজ্য হবে না।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ এরশাদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, এক জায়গায় কোম্পানিগুলোর যে কাউকে দায়বদ্ধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আবার অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচেষ্টা বা ব্যয়ের প্রশ্ন দিয়ে দায় এড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিধান নিয়েই প্রশ্ন তোলা যায়।

ধারা ২৯-এ আছে, বাংলাদেশি নাগরিকের উপাত্ত ব্যবহার করে যেসব প্রতিষ্ঠান লাভবান হচ্ছে, তাদের বার্ষিক লাভের ওপর ফি/চার্জ নির্ধারণ করবে সরকার। এখানে দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠান, যারা আয়কর দিচ্ছে, তাদের আবার ফি দিতে হবে কি না, সে প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া ফেসবুক, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লাভ কীভাবে জানবে সরকার, সে প্রশ্ন আছে। তা ছাড়া তাদের কাছে থেকে এই ফি আদায়ের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আর্থিক বিষয়সহ নানা ক্ষেত্রে সরকারের অন্যান্য আইন আছে। সেসব ক্ষেত্রে এই আইনের সম্পৃক্ততা কীভাবে হবে, তা স্পষ্ট নয়।

সংবেদনশীল উপাত্ত স্থানান্তরে সরকারের অনুমতি

অনুমোদিত খসড়ায় আছে, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর, টিআইএন নম্বর, বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী উপাত্ত, জেনেটিক তথ্য, অপরাধসংক্রান্ত তথ্যের মতো সংবেদনশীল বিপুল পরিমাণ উপাত্ত দেশের বাইরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি লাগবে। এ ছাড়া সরকার উপাত্তের শ্রেণিবিন্যাস করবে। প্রয়োজনে তা সংশোধন করবে।

উপাত্ত স্থানীয়করণের বিষয়টি এখানে সরাসরি না থাকলেও পরোক্ষভাবে তা আছে। অনুমোদিত খসড়ায় বলা আছে, অভ্যন্তরীণ গোপনীয় ব্যক্তিগত উপাত্ত ও সীমাবদ্ধ ব্যক্তিগত উপাত্ত এমনভাবে মজুত-ধারণ করতে হবে, যা বাংলাদেশের আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে থাকে। আবার অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিগত উপাত্ত ও গোপনীয় ব্যক্তিগত উপাত্ত শর্ত সাপেক্ষে বিদেশে স্থানান্তর করা যাবে।

টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের গবেষণাপ্রধান শাহজেব মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় বা বিভিন্ন স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত উপাত্ত দেশে মজুত বাধ্যতামূলক এবং সেখানে কোনো আইনি সুরক্ষা না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নজরদারির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক ও বৈশ্বিক উপাত্ত নিয়ন্ত্রকদের ওপর এই আইন অতিরিক্ত প্রযোজ্য হওয়ায় তা বাস্তবায়নে জটিলতাসহ অকার্যকারিতার ঝুঁকি তৈরি হবে। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ও সরকারি প্রশাসনের কাজের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ছাড় দেওয়ার বিধানে জবাবদিহি কমবে। পাশাপাশি নজরদারি ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির ঝুঁকি থাকবে।

অনুমোদিত খসড়ায় উপাত্তের শ্রেণিভেদে অপরাধ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। এ বিষয়ে শাহজেব মাহমুদ বলেন, অস্ট্রেলিয়াতে এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। অর্থাৎ অপরাধের সঙ্গে দণ্ডের বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হয়। সরকার সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান কোন বিবেচনায় করেছে, তা ভাবার বিষয়।

সরকারি কর্মচারীরাও দায়বদ্ধ

ধারা ৪৮-এ আছে, সরকারি চাকরি আইনসহ অন্য আইনে যা-ই থাকুক, সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান যদি এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান লঙ্ঘন করে, তাহলে জড়িত সরকারি কর্মচারী এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রশাসনিক জরিমানাসহ ট্রাইব্যুনাল দ্বারা দণ্ডনীয় অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। তবে সরকার এ-সংশ্লিষ্ট বিধান কার্যকরে বিধি তৈরি করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি কর্মচারীদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগটি ভালো। কিন্তু কীভাবে এবং কে এখানে অপরাধী চিহ্নিত হবেন, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ, সরকারি আদেশ ছাড়া কেউ কাজ করে না। সে হিসেবে কখনো মন্ত্রণালয় প্রধান বা সরকারপ্রধানও অপরাধী হতে পারেন।

অনুমোদিত খসড়া প্রসঙ্গে এরশাদুল করিম বলেন, গত মে মাসে সরকার একটি খসড়াকে চূড়ান্ত বলেছিল। কিন্তু এখন তারা যেটা অনুমোদন করেছে, তাতে অনেক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলো, যেগুলোকে এ ধরনের আইনের প্রাণ বলা হয়, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। অংশীজনদের যাঁরা মতামত দিলেন, তাঁদের সেই পর্যবেক্ষণ কোথায় গেল? অধ্যাদেশ প্রণয়নের এই প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ মনে হয়নি।

অধ্যাদেশে প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে অবারিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা আশঙ্কার। এটি নজরদারির সুযোগ তৈরি করে দেবে। বিশেষ করে পূর্বাভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, রাজনৈতিক সরকার এই সুযোগ লুফে নেবে। প্রয়োগ এক আইনে, আবার কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে আরেক আইনে। কর্তৃপক্ষ গঠন করবে সরকার। কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি স্পষ্ট না। বিচারিক কোনো পর্যবেক্ষণও নেই। যদিও জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়ায় পাঁচ সদস্যের বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটির বিধান রাখা হয়েছে, কিন্তু তারাও সবাই সরকারি কর্মকর্তা বা সরকার মনোনীত হবেন।

এ ধরনের আইন ঢালাওভাবে কার্যকর না করে খাত ধরে ধাপে ধাপে কার্যকর করা দরকার বলে মনে করেন এই শিক্ষক। তিনি বলেন, মালয়েশিয়াতে কয়েকটি খাতের ওপর প্রথমে এমন আইন কার্যকর করা হয়েছিল। কারণ, এ ধরনের আইনের ব্যাপকতা অনেক। মানুষসহ সংশ্লিষ্ট খাতকে প্রস্তুত হতে সময় দিতে হয়। তাঁদের জানতে-বুঝতে হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। অনুমোদিত খসড়াটি অনেক বিধি, প্রবিধাননির্ভর। তাই এর সুফল বা উদ্বেগের জায়গা বিধি-প্রবিধানের ওপর নির্ভর করছে। কেউ আইনের বিরোধী না। এ ধরনের আইন জরুরি। কিন্তু তা নিজেদের বাস্তবতা বুঝে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে তৈরি করা প্রয়োজন।