Thank you for trying Sticky AMP!!

পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। দ্রুত ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন খোরশেদ আলম। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পুর্ব ইচলি এলাকা

‘অন্যটে যে ঘর তুলমো সেই টাকাও নাই’

‘এবার নদীর ভাঙনে হামার আর জমি থাকিল না। তিনটা টিনের ঘর নিয়া এখন ইচলি বাজারের পাশোত অন্যের জায়গাত বসত গড়া লাগবে। অন্যটে যে ঘর তুলমো, সেই টাকাও নাই।’ নদীর পাড় থেকে ঘর সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এসব কথা বলছিলেন অভাবী কৃষক খোরশেদ আলম (৫০)।

শুধু খোরশেদ নয়, নিজের ভিটেমাটি, আবাদি জমি একের পর এক তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। এভাবে নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলে ইচলি গ্রামটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছে ভাঙনকবলিত মানুষেরা। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের ইচলি গ্রামে তৃতীয় দফা বন্যার পর এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ঘরবাড়িতে উঠেছে পানি। তাই বাঁশের মাচায় বসে আছেন গৃহিনী শিরিন বানু

ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে এই ইচলি গ্রামে প্রায় ৬৫০টি পরিবারের বাস ছিল। কিন্তু এ বছর কয়েক দফা বন্যা এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় নতুন করে এ এলাকা ভাঙতে শুরু করে। এবারের বন্যা ও নদীভাঙনে ইতিমধ্যে দুই শতাধিক পরিবার অন্যত্র চলে গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙনের শিকার হয়ে বাড়িঘর নিয়ে ইচলি বাজারের পাশে যাচ্ছেন কৃষক সাজু মিয়া (৫২)। একটি টিনের ঘর, আসবাব, ছাগল নৌকায় তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর থাকি নিজের ভিটামাটিত আছনো। এবার আর থাকা গেল না। নদীর ভাঙন খুব বেশি হওয়ায় ঘরবাড়ি ভাঙিয়া অন্য জাগাত যাইতোছি।’

নৌকায় মালামাল নিয়ে আশ্রয় খুঁজছেন সাজু মিয়া

কৃষক মনিরুজ্জামান টিনের তিনটি ঘর ভেঙে তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কের পাশে গিয়ে উঠেছেন। ইচলি বাজারের পাশে অন্যের জায়গায় বসবাস করবেন বলে তিনি জানালেন। তিনি ১০ বছর থেকে ইচলি এলাকায় বসবাস করলেও এবারের মতো এত নদীর ভাঙন কখনো ছিল না বলে দাবি করেন। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় এই এলাকা নতুন করে ভাঙছে বলে তিনি জানালেন।
লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদী বলেন, এলাকাবাসীর দাবি ছিল এ এলাকায় একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের। কিন্তু গত এক বছর থেকে এ বাঁধ না হওয়ায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন নতুন এলাকা ভাঙছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম জাকারিয়া বলেন, চীনের সহযোগিতায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন রোধে কাজ করা হবে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, তা জানা যায়নি।