নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগমের বাড়িতে ভাই আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, তবে পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি।
হামলার প্রতিবাদে কোম্পানীগঞ্জ থানা-সংলগ্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা। মিজানুর রহমান ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রোকেয়া বেগমের ছেলে ফখরুল ইসলাম মিজানুর রহমানের অনুসারী।
ওবায়দুল কাদেরের দুই বোন তাহেরা বেগম ও রোকেয়া বেগম হামলার ঘটনায় কাদের মির্জার অনুসারীদের দায়ী করে তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাত দশটা থেকে থানার সামনে অবস্থান করছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগম প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ তিনি বাড়ির ফটকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পান। তখন তিনি নামাজে ছিলেন। বিছানা থেকে উঠে তিনি বাড়ির ফটকে গেলে একদল যুবক বাড়ির ভেতরে ঢোকার জন্য ফটক খুলতে চিৎকার দিচ্ছিল এবং বাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছিল।
রোকেয়া বেগম বলেন, একপর্যায়ে তিনি এগিয়ে গিয়ে কে জিজ্ঞেস করলে, তাঁরা বলেন, ‘তোর ছেলে রাহাত কই? তাকে বের করে দে, দেখবি কী করি।’ ফটক না খোলায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কিছুক্ষণ পর তাঁরা চলে যায়। পরে তিনি ঘটনাটি মন্ত্রীকে অবহিত করেন।
রোকেয়া বেগম অভিযোগ করেন, ‘হামলার এই ঘটনা কাদের মির্জার নির্দেশে হয়েছে। এটি তাঁর গুন্ডাবাহিনীর কাজ। কাদের মির্জাই এই কোম্পানীগঞ্জের গডফাদার। তাঁর কাছে পাঁচ মাস আমরা জিম্মি হয়ে আছি। এর আগেও তাঁর গুন্ডাবাহিনী আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমি থানায় যাব মামলা করতে, মামলা না নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার না করলে থানায় অবস্থান করব।’
হামলার অভিযোগের বিষয়ে কাদের মির্জার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করলে এক ব্যক্তি ফোন ধরে আবদুল কাদের মির্জার ব্যক্তিগত সহকারী সিরাজুল ইসলাম পরিচয় দেন। তিনি বলেন, মেয়র বিশ্রামে আছেন। কারা তাঁর বোনের বাড়িতে হামলা করেছে এটা তাঁরা জানেন না। এটা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। মেয়র মহোদয় এখন শান্ত, তাই তাঁকে উত্তেজিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। তিনি রাত ৯টায় ও ৯টা ২৬ মিনিটে পরপর দুবার ফোন ধরে বলেন, ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন।
রাত দশটায় জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাহাতের (সেতুমন্ত্রীর ভাগনে) বাসার সমনে কয়েকজন গিয়ে গালমন্দ করে ও বাসার ফটকে লাথি দেয়। তবে ইটপাটকেল কিংবা ককটেল নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।