Thank you for trying Sticky AMP!!

ছিনতাইকারীর থাবায় ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া নারীর জ্ঞান ফেরেনি, আটক ৯

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চলন্ত ট্রেন থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ছিটকে নিচে পড়েন সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গতকাল বুধবার রাতে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া নারী সাবিনা ইয়াসমিনের (৩৫) জ্ঞান এখনো ফেরেনি। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি ট্রেন থেকে নিচে পড়ে গেলেও তাঁর সঙ্গে থাকা ছয় বছরের ছেলে মেরাজ ট্রেনেই রয়ে যায়। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছেলেকে সাবিনার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে পুলিশ রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নয়জনকে আটক করে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা স্টেশন এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রেললাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে যে কজন স্থানীয় ব্যক্তি আহত সাবিনাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত নিয়ে যান, তাঁদের একজন শহীদুল আলম। তিনি ভৈরব পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকার বাসিন্দা। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তিনি সাবিনার সঙ্গে ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাতেই সাবিনার মাথার সিটিস্ক্যান হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাথার পেছনের আঘাত গুরুতর। রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখনো তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। রাতেই সাবিনার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে আসেন। এখন সাবিনার সঙ্গে মাসুক মিয়া নামের তাঁর বোনের স্বামী আছেন।

পুলিশ জানায়, সাবিনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চরনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী মিলন মিয়া বেঁচে নেই। সাবিনা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। কর্মস্থলে ফেরার জন্য গতকাল চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গোধূলি ট্রেনের যাত্রী হয়েছিলেন। তিনি ট্রেনে ওঠেন আখাউড়া থেকে। রাত পৌনে নয়টার দিকে ভৈরব স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রাবিরতি দিয়ে আবার ছেড়ে গেলে ধীরগতিতে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম অতিক্রম করে। ওই সময় সাবিনা দুই কামরার সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছিনতাইকারীও সাবিনা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মের সামান্য সামনে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সাবিনার হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিতে টান দেন ছিনতাইকারী। এ সময় সাবিনা ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যান।

তবে ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রীদের কয়েকজন বলেছেন, সাবিনা দরজার কাছে ছিলেন। ছিনতাইকারীর অবস্থান ট্রেনে নয়, নিচে ছিল। সাবিনা ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার পর তাঁর সন্তান ট্রেনে রয়ে যায়। পরে যাত্রীরা শিশু মেরাজকে বিমানবন্দর পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেন। বিমানবন্দর পুলিশ আবার রাতেই মেরাজকে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয়। গভীর রাতে শিশুটির খালা তাসলিমা বেগম থানায় এসে মেরাজকে নিয়ে যান।

যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথে ভৈরব জংশন স্টেশন এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চলন্ত ট্রেনে এবং ট্রেনে ওঠানামার সময় প্রতিদিন একাধিক যাত্রী নানাভাবে অপরাধীদের হামলার শিকার হন।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয়জনকে আটক করা হয়েছে। আগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।