পঞ্চগড় সদরে ইউপি নির্বাচন

নানা ছন্দে আর গানের সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা

ইউপি নির্বাচনের প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে এলাকা। মাইকে চলছে প্রচারণা। রোববার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

‘এবার মার্কা দেখে নয়, ভোট দিব ব্যক্তি দেখে। যার কাছে সহজে গিয়ে সমস্যার কথা বলা যাবে, দেখা করতে লাইনে দাঁড়াতে হবে না, এমন ব্যক্তি দেখেই ভোট দিব।’ রোববার দুপুরে একটি চায়ের দোকানে বসে এমন কথাই বলছিলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের হালুয়াপাড়া এলাকার ভোটার ফারুক হোসেন (৪০)।

তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর এ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে এবার চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনির হোসেন নৌকা প্রতীকে, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে এবং জামায়াত-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম অটোরিকশা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গুলজার হোসেন হাতপাখা প্রতীকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল গফফার চশমা প্রতীকে ও হায়দার আলী আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রোববার সরেজমিন হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাহেববাজার, গইছপাড়া হাট, জয়গুন মার্কেট ও হাড়িভাসা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। দুপুরের পর থেকে করা হচ্ছে মাইকিং। নানা ছন্দে আর গানের সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা। এ ছাড়া প্রার্থীরা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের কর্মীরাও ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাচ্ছেন ভোট। বাজারের চায়ের দোকানগুলোতে মানুষের মুখে মুখে শুধুই ভোটের আলোচনা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ইউনিয়নে ছয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেও, ভোটের লড়াই হবে তিনজনের মধ্যে, হবে ত্রিমুখী লড়াই। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনির হোসেন, বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলমের অটোরিকশা প্রতীকের মধ্যে হবে লড়াই।

ভোটারদের কাছে তাঁরা তিনজনের কেউই কম নন। তবে তিনজনের মধ্যে প্রতীক নয়, ব্যক্তি দেখেই ভোট দেওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। হাড়িভাসা ইউনিয়নের পাহারবাড়ি এলাকার ভোটার মিজানুর রহমান বলেন, এই ইউনিয়নে ভোটের লড়াইটা হবে ত্রিমুখী। তবে মানুষের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ অনেক। এই ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত কোনো গন্ডগোল বা মারামারি নেই। সবাই শান্তিপূর্ণভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভোট চান।

জিন্নাতপাড়া এলাকার ভোটার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তো স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে মার্কার গুরুত্ব খুব বেশি নেই। আমরা সাধারণ ভোটাররা প্রার্থীর নীতি-আদর্শ আর ব্যক্তিত্ব দেখেই ভোট দেব।’

হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোট ভোটার ১৯ হাজার ৭৯৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৯৪৭ ও নারী ভোটার ৯ হাজার ৮৫২ জন।