Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বুড্ডা গ্রামে ড্রাগন ফলের বাণিজ্যিক চাষ করা হচ্ছে। গত রোববার।

পতিত জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ

হাবিবুর রহমান পেশায় ছিলেন ঠিকাদার। আর শফিকুল ইসলাম কৃষিকাজের পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। তাঁদের হাত ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় প্রথমবারের মতো পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে।

হাবিবুর (৪০) ও শফিকুল (৪২) উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বুড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। ২৫ জুলাই সরেজমিনে দেখা যায়, বিধিনিষেধের মধ্যেও ড্রাগন ফলের বাগান দেখতে এসেছেন কয়েকজন। ছবিও তুলছেন।

হাবিবুর ও শফিকুল বলেন, বুড্ডা গ্রামের তিতাস নদের পারে তাঁরা ৩ একর পতিত জমি ১০ বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছেন ৭ লাখ টাকায়। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ওই জমিতে ১ হাজার ৫০০ খুঁটির পাশে তাঁরা রোপণ করেছেন ৬ হাজার ড্রাগন ফলের চারা। যশোর, চট্টগ্রাম ও মৌলভীবাজার থেকে তাঁরা এ চারা কিনে এনেছেন। একেকটি চারা কিনেছেন ৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে। এখানে তাঁরা লাল, হলুদ, সাদা ও গোলাপি রঙের ড্রাগনের চারা রোপণ করেছেন।

হাবিবুর ও শফিকুল বলেন, ড্রাগন গাছে রাসায়নিক সারের তেমন প্রয়োজন হয় না। সামান্য জৈব সার দিলেই চলে। আর শীতকালে সন্ধ্যার পর আলোর ব্যবস্থা করতে হয়। এ ফলের গাছ একবার রোপণ করলে টানা ২৫ থেকে ৩০ বছর, এমনকি ৪০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। পূর্ণ বয়সের (চারা রোপণের এক বছর পর) একেকটি চারা থেকে প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ কেজি ফল পাওয়া যায়। আশার কথা হচ্ছে, এ গাছের মৃত্যুঝুঁকি নেই। এ ছাড়া এ বাগান থেকে প্রতিবছর ১৭-১৮ লাখ টাকার চারা বিক্রি করা সম্ভব। এতে তাঁরা বড় অঙ্কের লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

গত জুন থেকে সামান্য ফল পাকা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁরা ১০০ কেজির ওপরে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় লোকজন আকর্ষণীয় এ ফল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিচ্ছেন। তবে ১২ মাস পর পুরোদমে ফলন শুরু হলে তাঁরা এ ফল পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ড্রাগন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফল ছিল। পরে ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, চীন ও অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক হারে উৎপাদন শুরু হয়। দুই দশক ধরে আমাদের দেশে এ ফল আমদানি করা হচ্ছে।

কালীকচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম (৪৫) পেশায় শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘এ বাগান দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।’

হাবিবুর রহমান বলেন, এ বাগানের পেছনে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। কিছু ঋণ ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেলে এলাকার অনেক পতিত জমিতে এ ফলের চাষ করতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মর্জিনা আক্তার বলেন, শিগগিরই ওই বাগান দেখতে যাবেন ও তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।